নিরাপত্তার অভাবে শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় : দূর্বৃত্তের হামলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
দূর্বৃত্তদের হামলায় নিহত দূরুল হোদা (৪০) আলোচিত বিএনপি নেতা আলম হত্যা মামলার ১২ নম্বর আসামি ছিলেন।
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন সোমবার সকাল ১১:২২, ২৬ জুন, ২০২৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জে হত্যা মামলার এক আসামী আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েও নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে আশ্রয় নেন নিজ শ্বশুর বাড়ি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার টুনটুনিপাড়া এলাকায়। কিন্তু রোববার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় সেখানেই দূর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
দূর্বৃত্তদের হামলায় নিহত ব্যক্তি জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের মিরাটুলি বাবুপুর গ্রামের চাঁন মণ্ডলের ছেলে দূরুল হোদা (৪০)। তিনি আলোচিত বিএনপি নেতা আলম হত্যা মামলার ১২ নম্বর আসামি।
এ বিষয়ে নিহত দূরুলের শ্যালিকা মরিয়ম খাতুন বলেন, একটি হত্যা মামলায় সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন পান দূরুল দুলাভাই। এরপর থেকেই নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ে ছিলেন তিনি। আর তাই আদালত থেকে মুক্ত হয়ে নিজ বাড়িতে না গিয়ে ওঠেন আমার আব্বা আনারুল ইসলামের বাড়িতে। তবে সেখানে আশ্রয় নিলেও কে বা কারা আজ রোববার বাড়ি ঘেরাও করে দেশি অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে দূরুল ভাইকে। পরে তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
এ বিষয়ে নিহত দূরুলের বোন আয়েশা বেগম বলেন, মৃত ভেবে পালিয়ে যাবার পর স্থানীয়দের সহযোগীতায় প্রথমে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার আরো অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে রামেকে নেয়ার পথে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার গোপালপুর নামক স্থানে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ভাই দূরুলের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আব্দুস সামাদ জানান, দূরুলের দুই পায়ে ও দুই হাতে দেশি অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। তার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে।
দূরুল নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন, দূরুল হোদা একটি হত্যা মামলার আসামী। তবে তিনি জামিনে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে পালিয়ে গেলে পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী নেয়ার পথে তিনি মারা যান। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল মটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি আলম হোসেন। এ সময় দূর্বৃত্তরা ককটেল ফাটিয়ে গতিরোধ করে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই বাবুল আলী শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় এজাহার নামীয় ১২ নম্বর আসামি ছিলেন দূরুল হোদা।