ঢাকা (রাত ২:২৮) শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছেন ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান

মীর এম ইমরান,মাদারীপুর মীর এম ইমরান,মাদারীপুর Clock মঙ্গলবার রাত ০৯:৪২, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মাদারীপুরের ডাসার থানায় নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান যোগ দিয়েছেন ৮ মাস হলো।
কিন্তু জনপ্রত্যাশা পূরণ হয়েছে প্রায় শতভাগ।সন্ত্রাস, মাদক আর জুয়া খেলার বিভিন্ন আখড়া বলে পরিচিত থানার বিভিন্ন জায়গা এরই মধ্যে বদনাম ঘুচতে শুরু করেছে।কর্মদক্ষ ওসি এরই মধ্যে তার কাজ দিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

মাদারীপুর জেলার ডাসার,নবগ্রাম,কাজি বাকাই,গোপালপুর এবং বালিগ্রাম এই ৫টি ইউনিয়ন মিলে ২০১৩ সালে গঠিত হয় মাদারীপুর জেলা নতুন থানা ডাসার।এটি গঠনের পর থেকেই থানাটির বিভিন্ন জায়গা ক্রাইম জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ থানার বিভিন্ন এলাকা একটা সময় সন্ত্রাসী এবং চরমপন্থী অধ্যুষিত ছিলো। দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে জুয়া,চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল ডাসার থানার বিভিন্ন এলাকা।

এক সময় সন্ত্রাস কমে গেলেও মাদকে জয়লাভ ঘটে ডাসার থানার বিভিন্ন এলাকা।কিছু কিছু গ্রামে মুড়ি বাদামে মতো মাদক কেনাবেচা হয়। পাড়ায়-পাড়ায় চলত জুয়ার আড্ডা। অনেকেই অভিযোগ করতেন কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যের সঙ্গে মাদক কারবারীদের সখ্যতা থাকায় অবস্থা লাগামহীন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাদারীপুরের ডাসার থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেয় মোঃ হাসানুজ্জামান।তার যোগদানের পরই যেন রাতারাতি বদলে গেছে ডাসার থানার দৃশ্যপট। থানার ভেতরে বাইরে পরিবর্তন লক্ষণীয়।মাদক সম্রাট-সম্রাজ্ঞীরা এখন প্রায়ই আন্ডারগ্রাউন্ডে।পাড়ায় পাড়ায় জুয়ার আসর উধাও।

ডাসার থানা ভবনের পাশের মার্কেটের এক ক্ষুদ্রব্যবসায়ী চায়ের দোকানদার সন্তোষ বাড়ৈর কাছে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ডাসার থানা প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে মোঃ হাসানুজ্জামান ওসির মতো এত সুন্দর কর্মদক্ষতা দেখিনি।জনপ্রত্যাশা পূরণে এ ওসির ভূমিকা প্রশংসনীয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন আর থানায় দালালদের তেমন দৌরাত্ম্য নেই।থানায় সেবা নিতে আসা মানুষের ভোগান্তি নেই।সাধারণ ডাইরী করতে কোনো টাকা পয়সা লাগেনা।থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাসানুজ্জামান বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে, আলোচনা সভায় গিয়ে মানুষকে জানিয়ে দেন পুলিশ জনতার বন্ধু। তারা তাদের যে কোনো আইনি সহায়তায় পুলিশের কাছে যেনো নি:সংকোচে যান। যারাই এ ওসির কাছে গিয়েছেন তাদেরই ধারণা পাল্টে গেছে। পুলিশ জনতার বন্ধু তার প্রমাণ জনসাধারণ পেয়েছেন বলে সেবাপ্রাপ্তরা জানান।

এদিকে চাঁদাবাজ আর মাদক কারবারিদের ব্যবসায় জ্বলছে লালবাতি। চাঁদাবাজ মাস্তানদের টিকিটিও দেখা যাচ্ছে না ডাসার থানার ক্রাইম জোন এলাকাগুলোতে।

ওসি মোঃ হাসানুজ্জামানের কাছে এ অভূতপূর্ব সাফল্যের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি যোগদানের পর থেকেই ৫ ইউনিয়নে ৫টি বিট অফিস ও ৪৫ টি ওয়ার্ড ভিত্তিক মিটিং করে মানুষকে সচেতনামূলক বক্তব্য প্রদান,গ্রাম পুলিশদের নিয়ে প্রতি মাসে থানায় মিটিং,ইউনিয়নের প্রায় ২০০ শত মসজিদের ইমামদের নিয়ে মিটিং,বাল্যবিবাহ,মাদক,ইভটিজিং,কিশোর গ্যাংসহ সকল অপরাধ কঠোর হাতে দমন করতে পেরেছি এ সবই সম্ভব হচ্ছে এলাকার মানুষের সহায়তায়।

তিনি আরো বলেন,এ থানায় যোগদানের পর জানুয়ারী ২১ইং থেকে আগস্ট ২১ ইং পর্যন্ত ৬১টি বিভিন্ন ধরনের মামলা হয়েছে।কোন মামলা মূলতবী নেই।এবং জানুয়ারি ২১ইং থেকে আগস্ট ২১ ইং পর্যন্ত ১৪টি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে।এই ১৪টি মামলাই শেষ হয়েছে,কোন মামলা মূলতবী নেই।অত্র থানায় পূর্বে মোট ১১০টি গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলতবী ছিল। জানুয়ারি ২১ইং থেকে আগস্ট ২১ইং পর্যন্ত জিআর-৬৮, সিআর-৪১, জিআর সভা-০৬, সিআর সভা-০২, সর্বমোট ১১৭টি গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রাপ্তি হয়ে পূর্বের মূলতবীসহ জিআর-১০২, সিআর-৫৬, জিআর-সাজা-১০, সিআর সাজা-৫, সর্বমোট ১৭৩টি গ্রেফতারি পরোয়ানা নিস্পত্তি করা হয়েছে। বর্তমান জিআর-১৬, সিআর-০৬, জিআর সাজা-২৩, সিআর সাজা-৯সহ মোট ৫৪টি গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলতবী আছে।

তিনি তার দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন এবং যতদিন ডাসার থানায় আছেন তা করে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT