ঢাকা (দুপুর ১২:৪৩) সোমবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News সিলেটে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের মাঝে নাভিশ্বাস Meghna News সাইফুল প্রধানের হাতের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে ঢাকারগাঁও গ্রামের সমাজব্যবস্থা ও উন্নয়নচিত্র Meghna News বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা প্রতিদিনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিকাশ কর্মীর বাড়ি ফেরা হলোনা Meghna News হাফেজ-এ- কোরআনদের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায়: আব্দুস সাত্তার Meghna News লোহাগড়ায় পুনুরুজ্জীবিত হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক ”জিয়া মঞ্চ” Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষক দলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত Meghna News দাউদকান্দিতে যৌথবাহিনীর অভিযানে নগদ অর্থ ও মাদকসহ দুইজন আটক Meghna News জাতীয় সংসদে কোনো সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে না! Meghna News বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার

ছাতকে লিচুর বাম্পার ফলন

ছাতক উপজেলা ২৭৪২ বার পঠিত

মেঘনা নিউজ ডেস্ক মেঘনা নিউজ ডেস্ক Clock বৃহস্পতিবার রাত ০২:৫৪, ২৮ মে, ২০২০

মোঃ ইবাদুর রহমান জাকির, সিলেট প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জেে ছাতকে চলতি বছরেও লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। জৈষ্ঠ্য মাসের রসালো ফল পাকা লিচু এখানের গাছে গাছে ঝুলছে। এখানের লিচু বাগান গুলো এখন মনোমুগ্ধকর দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। চারিদিকে শুধু পাকা লিচু আর লিচুর সমাহার। ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের মানিকপুর, গোদাবাড়ী, বড়্গল্লা, চানপুর, রাজারগাও, কচুদাইড় গ্রামে রয়েছে রসালো ফল লিচুর বাগান।

দোয়ারাবাজার উপজেলার লামাসানীয়া গ্রামেও লিচু বাগানের বিস্তৃতি ঘটেছে। ছাতকের মানিকপুর গ্রামে প্রথমে বাণিজ্যিক ভাবে লিচু চাষ শুরু হয়। আর এখান থেকেই আশ-পাশ গ্রামের মানুষ লিচু চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েন।

স্থানীয়রা জানান শতাধিক বছর পূর্বে গৌরীপুরের জমিদারের কাছারিবাড়ী ছিল মানিকপুর গ্রামে। বর্তমানে ঐ বাড়ীটিতে মানিকপুর জামে মসজিদ নির্মান করা হয়েছে।

জমিদারের নায়েব হরিপদ রায় ও শান্তিপদ রায় কাছারি বাড়ীতে কয়েকটি লিচু গাছ লাগিয়েছিলেন। বিশাল আকারের লিচু গাছগুলো এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে কাছারি বাড়ীতে। কাছারি বাড়ীর এসব লিচু গাছ থেকে গ্রামের বাড়ীতে বাড়ীতে ২/১ টি করে গাছ লাগিয়েছিলেন গ্রামের লোকজন।

এ গাছগুলোতে লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় এবং ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় লিচু চাষে গ্রামের অনেকেই আগ্রহী হয়ে পড়েন।এবং বাণিজ্যিকভাবে কয়েকজন লিচু উৎপাদন শুরু করেন।

২০১৪ সালে বাগানীরা কোটি টাকার লিচু বিক্রি করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এ থেকেই লিচুর গ্রাম হিসেবে মানিকপুর পরিচিতি লাভ করে। পর্যায়ক্রমে আশ-পাশের গ্রামগুলোতেও বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ শুরু হয়।

মানিকপুর গ্রামের লিচু চাষী আবু তাহের রইছ মিয়া, আলী হোসেন, আরব আলী, শুকুর আলী, জামাল উদ্দিন, বাদল মিয়া, মতিউর রহমান, রবি মিয়া গোদাবাড়ী গ্রামের আনর মিয়া, ফরিদ মিয়া, বাচ্চু মিয়া, রুস্তুম আলী জানান, বাড়ীর অাঙ্গিনায় রোপণকৃত লিচু গাছের লিচু বিক্রি করে তাদের কিছুটা আয় হলে তারা লিচুর বাগান করতে আগ্রহী হন।

মূলত তারা জমিদারের কাছারি বাড়ীর লিচু গাছ থেকেই চারা সংগ্রহ করে লিচুর বাগান করেছেন। প্রতিবছরই এখানে লিচুর ভালো ফলন হচ্ছে। কয়েকটি গ্রামের বাগানীরা লিচু বিক্রি করে প্রতি মৌসুমে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় করেন।

লিচুর ভালো ফলনের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নেন তারা। বাগানীরা জানান বাগানের লিচু চামচিকা পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে তাদের প্রচুর কষ্ট করতে হয়। দু’বছর ধরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের প্রচেষ্টায় গ্রামগুলো বিদ্যুতায়িত হয়েছে।

বিদ্যুতায়নের আগে বাগানের অর্ধেক লিচু চামচিকা, বাদুড় ও পোকামাকড় নষ্ট করে ফেলতো। বিদ্যুত আসার কারনে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যাবহার করে পোকামাকড়, চামচিকা, বাদুড়, কটকটি ইত্যাদি প্রাণী তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। ছাতকের বাগান গুলোর লিচু সুমিষ্ট হলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের লিচুর চেয়ে আকারে অনেকটা ছোট।

কয়েকবছর আগে সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল এখানের লিচু চাষীদের উন্নত জাতের লিচুর চারা দিয়েছিলেন। এসব চারা থেকে এখানে বড় আকারের লিচুও ফলন হচ্ছে। লিচু চাষীরা জানান বাগানে চাষকৃত লিচু বাজারজাত করতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। রাজারগাও থেকে চৌমুহনী বাজার রাস্তার একটি ব্রিজ ধসে পড়ায় এখানে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

লিচু নিয়ে দোয়ারা উপজেলার বালিউরা বাজার হয়ে তাদের ছাতক শহরে আসতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খাতে তাদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। এ অঞ্চলে উৎপাদিত লিচু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হলেও চলতি মৌসুমে করোনা ভাইরাসের কারনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় তাদের বাগানের লিচু শুধু সিলেট অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় চাষীরা আশাবাদী চলতি মৌসুমেও তারা দেড় কোটি টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবেন।

দোয়ারাবাজার উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ও গোদাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন লিচু চাষে মানুষকে আগ্রহী করতে অব্যাহত ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এখানের অধিকাংশ লিচু চাষীরা তার পরামর্শে লিচু বাগান করেছেন। এ অঞ্চলের মাটি লিচু চাষের উপযোগী বিধায় তিনি সবসময় লিচু চাষে উন্নত প্রযুক্তি ব্যাবহার ও লিচু চাষে চাষীদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান ছাতকে পূর্ব থেকেই লিচুর ফলন হতো। বর্তমানে এখানে উন্নতজাতের লিচুর চাষ হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগ লিচু চাষীদের সবধরনের সহযোগিতা করছে।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT