ঢাকা (ভোর ৫:৩৮) সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


চাঁদাবাজীর মামলায় জগতপুর মাদ্রাসা সুপার সিলেট কারাগারে

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock শনিবার দুপুর ০২:০৭, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯

মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজারঃ
 সিলেটের বিশ্বনাথে মাজার কর্তৃপক্ষের কাছে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস আলী আল হোমাইদী’কে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের পিটাকরা গ্রামের মৃত সিকন্দর আলীর পুত্র ও মৌলভীবাজার জেলার জগৎপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার।
গতকাল বুধবার সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪র্থ আদালতে হাজির হয়ে ওই মামলার ৪জন আসামী জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তিনজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন এবং প্রধান আসামী ইলিয়াস আলী আল হোমাইদী (৪৫)’র জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতের প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ফরহাদ আহমেদ।
মামলার জামিনপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা হলেন- পিটাকরা গ্রামের আলকাছ আলী (৫০), মোহাম্মদ আলী (৩০) ও মৃত ইরফান আলীর পুত্র জাহির আলী (৬০)। মামলার অপর অভিযুক্ত জাহির আলীর পুত্র আয়না মিয়া পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, বিশ্বনাথ উপজেলার পিটাকরা গ্রামের মৃত আব্দুল মুতালিব উরফে কটাই মিয়ার পুত্র ও স্থানীয় শাহ্ সুনামদী (রহ:) সহ তিন ওলীর মাজারের মোতাওয়াল্লী আখতার হোসেন বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের ইলিয়াস আলী আল হোমাইদী সহ ৫জনকে অভিযুক্ত করে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগে আদালতে সম্প্রতি একটি জিআর মামলা দায়ের করেন। এরপর আদালতের নির্দেশে গত ৩ নভেম্বর মামলাটি বিশ্বনাথ থানায় রেকর্ড (এফআইআর) করা হয়। বিশ্বনাথ থানার মামলা নং- ৫ ও জিআর- ২৩৫/১৯।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করে হয়, পিটাকরা গ্রামে ‘হযরত শাহ্ সুনামদি (রহ:), হযরত শাহ্ সরবদি (রহ:) ও হযরত শাহ্ সনদাসি’র (র:) মাজার’ নামে তিন ওলীর মাজার রয়েছে। বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসক কার্যালয়ে ‘শাহ্ সুনাম উদ্দিন গং ওয়াক্ফ এষ্টেট’ মাজারটি তালিকাভূক্ত (ইসি নং- ১৫৪০৫) রয়েছে। ওয়াক্ফ প্রশাসক কর্তৃক আখতার হোসেন মোতাওয়াল্লী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১২ সাল থেকে বংশানুক্রমে এই মাজারের রক্ষনাবেক্ষন, উন্নতি, ওয়াজ মাহফিল ও বাৎসরিক উরুস পরিচালনা করে আসছেন।
অভিযুক্তরা মাজার বিদ্ধেসী ও প্রায় সময় মাজারের আয় থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। যুগ যুগ ধরে প্রতি বৎসর পৌষ মাসের ২০ তারিখে মাজার প্রাঙ্গনে উরুস আয়োজন করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মাজার প্রেমী ও ভক্তরা সমবেত হন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৩ জানুয়ারী (২০ শে পৌষ) পূর্ব নির্ধারিত উরুস আয়োজনের জন্য গত ১৭ অক্টোবর বিকেলে মাজার প্রাঙ্গনে পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ সমবেত হন। তখন অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ মাজার প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এভাবে প্রতি বছর উরুসের আগে ২লক্ষ টাকা করে চাঁদা না দিলে উরুসের কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না বলে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলে মামলা এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
২০১০ সালে হোমাইদি  ছাতক দিনেরটুক দাখিল মাদ্রাসা (প্রস্তুাবিত) আলিম মাদ্রাসা শাখার সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকে সেখানেও মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রী  শিক্ষকদের সাথে অসংলগ্ন কথা বার্তা ও অসদাচরন করার ফলে বাধ্য হয়ে  ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক বৃন্দ তাহার উপর অনাস্থা প্রকাশ করিলে সেখান থেকেও তাহাকে অপসারন করা হয়।
পরে ২০১২ সালে নওমৌজা জগৎপুর দাখিল মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক( সুপার) হিসেবে যোগদানের পরই সেখানেও শাহনুর নামের এক  ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করলে সাথে সাথে তাহাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
জগৎপুর এলাকার কয়েকজন প্রবিন মুরব্বি ও ঐ এলাকার বাসিন্দারা জানান, এই হোমাইদি আমাদের মাদ্রাসার সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকে আমাদের মাদ্রাসার অবস্থা খুবই খারাপ আমাদের মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রী আর আগের মতো নেই যতদিন যাচ্ছে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ক্রমশ কমেই যাচ্ছে।
অত্র এলাকার বাসিন্দারা জানান এই মাদ্রাসা আমরা  অনেক  পরিশ্রম করে তৈরি করেছি আমরা চাইনা এইরকম একজন চাঁদাবাজ ও দুর্নিতি প্রকৃতির লোকের জন্য আমাদের এই প্রতিষ্ঠনটি ধংস হয়ে যাক।
আমরা তাহাকে আর আমাদের মাদ্রাসায় দেখতে চাইনা সে যদি সসম্মানে আমাদের প্রতিস্টান ছেড়ে চলে না যায় তাহলে আমরা এলাকাবাসি সবাই একত্রিত হয়ে তাহার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।



শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT