গৌরীপুরে শিশুদের সাথে ইউএনও-এসিল্যান্ডের অন্যরকম বিকেল
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ সোমবার সন্ধ্যা ০৭:২২, ৮ আগস্ট, ২০২২
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পরিদর্শন করতে যান ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ইউএনও হাসান মারুফ ও এসিল্যান্ড মোসা. নিকহাত আরা। প্রশাসনের এই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কাছে পেয়ে শিশুরা মেতে উঠে আনন্দে। শিশুদের এই আনন্দঘন পরিবেশ দেখতে ছুটে আসেন আশেপাশের বাসিন্দারাও।
রোববার বিকালে ইউএনও ও এসিল্যান্ড উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের তাঁতকুড়া গ্রামে মুজিববর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পরির্দশনে যান। তাদের বহনকারী সরকারি দুটি গাড়ি যখন গ্রামের সড়ক হয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দিকে আসছিল। তখন গাড়ির পেছনে পেছনে ছুটতে ছুটতে গ্রামের একদল শিশু আশ্রয়ণ প্রকল্পে চলে আসে।
এসময় ইউএনও ও এসিল্যান্ড গাড়ি থেকে নেমে শিশুদের সাথে হাসিমুখে ছবি তোলেন। পরম মমতায় হাত ভুলিয়ে দেন তাদের মাথায়। কোন ধরনের আড়ষ্টতা ছাড়াই শিশুরাও কিছুক্ষণের জন্য আনন্দে মেতে উঠে তাদের সাথে। সেই আনন্দে যোগ দিয়ে এই দুই কর্মকর্তাও শিশুদের সাথে গল্প জুড়ে দেন।
জানতে চান শিশুদের মধ্যে কে কোন শ্রেণিতে পড়ে, কার কী স্বপ্ন, কার কী পছন্দ-অপছন্দ। পরে শিশুদের নিয়ে গ্রামের দোকানে নিয়ে এসে চকলেট ও বিস্কুট উপহার দেন ইউএনও ও এসিল্যান্ড।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারজিয়া আক্তার বলেন; সড়কে গাড়ি দেখে আমরা সবাই দৌঁড়ে পেছনে ছুটতে থাকি। কিন্ত যখন গাড়ি থেমে যায় তখন ভয় পেয়ে যাই। কিন্তু স্যার ও মেম গাড়ি থেকে নেমে আমাদের আদর করে কাছে ডেকে নেয়। সবার সাথে ছবি তুলে; তখন সবার ভয় কেটে যায়।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহানা বলেন স্যার ও মেম আমাদের সবাইকে চকলেট ও বিস্কুট কিনে দিয়েছেন। পড়শোনা করে কে কি হতে চায় জানতে চেয়েছেন। আমাদের সাথে হৈ-হুল্লোড় করেছেন। আমাদের খুব ভালো লেগেছে।
এসিল্যান্ড নিকহাত আরা বলেন, শিশুরা হলো সুন্দরের প্রতীক, পবিত্রতার প্রতীক ও আনন্দের উৎস। ওদের সাথে গল্প-কথা বলতে বলতে কিছুক্ষণের জন্য নিজেও যেনো ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। যখন বিদায় নিয়ে ফিরে আসছিলাম তখন বারবার শিশুদের কচিকাচা মুখগুলো চোখে ভাসছিল।
ইউএনও হাসান মারুফ বলেন, দাপ্তরিক কাজের ফাঁকে শিশুদের সাথে একটা সুন্দর বিকাল কাটাতে পেরে নিজের ভেতর অন্যরকম ভালো লাগা করছে। যতক্ষণ ওদের সাথে ছিলাম, তখন আর নিজেকে প্রশাসনের কর্মকর্তা মনে হয়নি। ফিরে আসার সময় ওরা যখন হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছিল তখন মনের অজান্তেই চোখের কোনে পানি চলে আসে।