কিশোরগঞ্জে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাড়ি ভাঙচুর
মোঃ কামরুজ্জামান সোমবার বেলা ১২:৫৪, ২৭ জুলাই, ২০২০
রায়হান জামান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ এম রুহুল কুদ্দুছ ভূঞা জনির সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাঁকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলা সদরের জেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে একদল লোক লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর গাড়িতে হামলা চালায় বলে জানা গেছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ এম রুহুল কুদ্দুছ ভূঞা জনি এ ঘটনার জন্য তাঁর প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম ও তাঁর ভাতিজা সদর ইউপি চেয়ারম্যান কারার শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপকে দায়ী করেছেন। হামলার শিকার উপজেলা চেয়ারম্যানের অভিযোগ, তাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে এ হামলায় মদদ দিয়েছেন। হামলার শিকার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ এম রুহুল কুদ্দুছ ভূঞা জনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু ইসহাক ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলটির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক কারার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন। নির্বাচনের পর থেকে দুইপক্ষের মধ্যে উপজেলার রাজনীতি, আধিপত্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সকালে তিনি সরকারি গাড়ি যোগে তার বাসা থেকে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় যোগ দিতে উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর গাড়িটি অডিটোরিয়ামের কাছে আসতেই সোহেল ও কামরুলসহ কয়েক যুবক গাড়ির গতিরোধ করে। তখন তারা লাঠিসোটা নিয়ে একযোগে হামলা চালিয়ে গাড়িটি ভাঙচুর করে। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান লাঞ্ছনার শিকার হন এবং তাঁর ভাতিজা নিয়াজ হাসান রকিকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে হামলাকারীরা। অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কারার সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। আমি বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিলাম। পরে ঘটনা শুনেছি। মূলত আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান চাকরি দেওয়ার নাম করে কামরুল নামে এক যুবকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছিলেন। পরে তাঁকে আর চাকরি দেয়নি। সেই কামরুল লোকজন নিয়ে তাকে আটকায়। ওই সময় সেখানে হাঙ্গামা হয়। সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কারার শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপ বলেন, ‘আমি নিজেও একজন জনপ্রতিনিধি। আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। এসববের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি শুনেছি, সেখানে হাঙ্গামা হয়েছে ঠিকই কিন্তু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। গাড়ি সম্ভবত উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজনই ভেঙেছে। এখন এর দায় আমাদের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চলছে।’ এ বিষয়ে নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম সিদ্দিকী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা তিনিও শুনেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে গাড়ির ভাঙচুরের ঘটনার পর উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। উপজেলা চেয়ারম্যান এ এম রুহুল কুদ্দুছ ভূঞা জনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।