২৪ ঘণ্টার মধ্যে কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসলো ২টি মৃত তিমি
ডেক্স রিপোর্ট রবিবার রাত ০১:৫৩, ১১ এপ্রিল, ২০২১
কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে আরও একটি বিশালাকার মৃত তিমি। শনিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে হিমছড়ি বড় ঝর্ণার দক্ষিণের সমুদ্র সৈকতে এ মৃত তিমিটি পানিতে ভেসে এসে বালিয়াড়িতে আটকে পড়ে।
এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দু’টি মৃত তিমি ভেসে এলো। ভেসে আসা এ দু’টি তিমির শরীরে পঁচন ধরেছে এবং প্রায় গলিত।
কক্সবাজার সমুদ্রসম্পদ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক মফিজুর রহমান মফিজ জানিয়েছেন, দু’টি কারণে তিমি মাছ মারা যায়। প্রথমত, বয়সকাল পার হলে তিমি আত্মহত্যা করে থাকে। দ্বিতীয়ত,বঙ্গোপসাগরে জাহাজ চলাচলের সময় আঘাতের কারণে তিমি দুটি মারা যেতে পারে। তিমিটির ওজন আনুমানিক আড়াই টনের মতো হবে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।
তিনি জানিয়েছেন, পরপর দুটি মৃত তিমি সাগর থেকে ভেসে এসেছে। ভেসে আসা তিমি দুটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার পর জানা যাবে কীভাবে তিমি দু’টি মারা গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করতে পারি তিমি দু’টি বয়সজনিত কারণে মারা যেতে পারে এবং ১০ থেকে ১২দিন আগে এই তিমি দু’টির মৃত্যু হতে পারে।
হুমায়ুন কবির জানান, দুর্গদ্ধ এড়াতে শুক্রবার সাগর পাড়ে আটকে থাকা তিমিটি উদ্ধার করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এটিও একইভাবে মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে। তবে দুই মাস পর তিমি দু’টির কঙ্গাল সংগ্রহ করা হবে। এটি বিভিন্ন মিউজিয়ামে এবং পরবর্তীতে গবেষণার কাজে আসবে।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস,এম, খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন, জোয়ারের পানিতে এই পর্যন্ত দুইদিনে দু’টি মৃত তিমি ভেসে এলো। এ কারণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনো জানা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের পরই বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে
কক্সবাজার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আশরাফুল হক জানিয়েছেন, সাগরে তিমি কয়েক প্রকার রয়েছে। কিন্তু, ভেসে আসা এই দুটি তিমি আসলে কোন প্রকার সেটিও চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এটি নমুনা সংগ্রহ করে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে ভেসে আসা তিমির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল তিমিটি আত্মহত্যা করেছে। এতেই বলা যেতে পারে গত দুইদিনে ভেসে আসা তিমিগুলো বয়সজনিত অথবা জাহাজের কোনো বিষাক্ত পানি খেয়ে মৃত্যু হতে পারে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিন আল পারভেজ জানিয়েছেন, জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা প্রথম তিমিটি রাতে আমরা মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে ফেলা হয়েছে। একইভাবে শেষের তিমিটিও নমুনা সংগ্রহের পর মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে বিশালাকার তিমি মাছটি বালিয়াড়িতে আটকা পড়ে। একইভাবে শনিবার সকালে আরও একটি তিমি ভেসে সৈকতে বালির চরে ভেড়ে।