১৭ বছর পর দফাদার রজব আলী হত্যা মামলার রায় : নিহতের পরিবারের অসন্তোষ
ওবায়দুর রহমান শুক্রবার রাত ১০:৫৩, ২১ জুলাই, ২০২৩
১৭ বছর পর ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের বহেরাতলা গ্রামের দফাদার রজব আলী হত্যা মামলায় সহোদর চার ভাইসহ সাত আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিন আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাবরিনা আলী এই রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ে নিহতের পরিবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা ফাঁসির দাবী জানিয়েছেন।
আদালতের রায়ে দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আব্দুল কদ্দুছ, তারা মিয়া, হাদিস মিয়া, আবু বকর, আতিউল্লাহ, মতিউর রহমান মতি ও ফকর উদ্দিন।
ওই মামলায় বাকি আসামিদের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। সেই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- আহসান উল্লাহ, আক্কাস আলী ও আবাদ উল্লাহ।
রায়ের পর মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সঞ্জীব সরকার জানান, ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবর গৌরীপুর উপজেলার বাহেরতলা এলাকায় আসামিদের হামলায় খুন হন স্থানীয় চৌকিদার রজব আলী। এ ঘটনার একদিন পর ১৩ অক্টোবর নিহতের ছেলে হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আসামিদের মধ্যে একজন মারা যান।
এ রায়ে নিহতের কন্যা রিনা আক্তার বলেন, আমার বাবাকে হত্যার পর আমরা অপেক্ষা করেছি ১৮ বছর। ১৮ বছর পর আসামীদের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই ফাঁসির দাবী জানাই।
মামলার বাদী হারুন অর রশিদ বলেন, এতো বছর পর যাবজ্জীবনের রায় হয়েছে। আমরা এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছি। আমাকে আসামীপক্ষ বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি প্রদান করেছে। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির জন্য।
নিহতের স্ত্রী আয়েশা খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে ১৮ বছর পূর্বে হত্যা করেছে। আমি ১০ ছেলে মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্ট করে জীবন যাপন করেছি। আমি আমার স্বামী হত্যার আসামীদের মৃত্যুদন্ড দাবী করছি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের স্বজনরা এই রায়ে ন্যায় বিচার পাননি বলে দাবি করেন। আসামিপক্ষের স্বজন মমিনুল ইসলাম রুবেল সাংবাদিকদের জানান, আমরা এই রায়ে ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে।
উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালে বহেরাতলা গ্রামের জমি বন্ধক নিয়ে এ খুন হয়েছিলো। বর্তমানে ক্রয়সূত্রে জমিটির ভোগ দখলে রয়েছেন