সুনামগঞ্জে চোরাই কয়লা নিয়ে সংঘর্ষে ৭জন আহত,৬বস্তা কয়লা জব্দ
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া,সুনামগঞ্জ রবিবার বিকেল ০৪:১৬, ৮ নভেম্বর, ২০২০
সুনামগঞ্জ সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিকে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৭জন আহত হওয়ার খবর পাওয়াগেছে। আহতদের মধ্যে বিশিস্ট চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লা (৩৮),তার ছেলে শুকুর আলী (১৮), ছোট ভাই আব্দল্লা (২৮) ও বিজিবির শ্রমিক আব্দুল আলী ভান্ডারী (৫০), তার ছোট ভাই শরাফত আলী (২৫)সহ অন্যান্যদেরকে স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তবে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মূহূর্তে আবারও সংঘর্ষ হতে পারে এমন আশংকা রয়েছে বলে জানাগেছে।
এলাকাবাসী জানায়- জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য হিসেব পরিচিত চাঁরাগাঁও সীমান্তের লালঘাট ও বাঁশতলা এলাকা দিয়ে প্রতিদিনের মতো গতকাল ০৭.১১.২০ইং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এফএস জিকরুলের সহযোগীতায় বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া,শফিকুল ইসলাম ভৈরব,চিহ্নিত চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লা,খোকন মিয়া,বাবুল মিয়া,জসিম মিয়া ও হারুন মিয়া শতাধিক লোক নিয়ে ভারতের ভিতরে প্রবেশ করে কয়লা পাচাঁর শুরু করে। এই খবর পেয়ে রাত ৭টায় বিজিবি সদস্যরা লালঘাটের ১১৯৬পিলার সংলগ্ন এলাকায় অভিযান শুরু করে। এসময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে উপরের উল্লেখিত সোর্স ও চোরাচালানীরা প্রায় শতাধিক বস্তা কয়লা নিয়ে পালিয়ে যার যার বাড়িঘরের ভিতরে লুকিয়ে পড়ে। তারপর বিজিবি ঘটনাস্থল থেকে ৬বস্তা কয়লা উদ্ধার করে শ্রমিক আব্দুল আলী ভান্ডারীকে দিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এঘটনার প্রেক্ষিতে সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাচালানীরা বিজিবির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসুটা নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে লালঘাট গ্রামের রাস্তায় আসে। কিন্তু বিজিবিকে না পেয়ে তাদের জব্দকৃত চোরাই কয়লার পরিবহনকারী শ্রমিক আব্দুল আলী ভান্ডারী ও তার ছোট ভাই শরাফত আলীর বাড়িতে গিয়ে হামলা করে। এই খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা দল বেঁধে ঘটনাস্থলে আবার আসে। তখন বিজিবির উপস্থিতি দেখে চোরাচালানী শহিদুল্লা,রমজান মিয়া ও খোকন মিয়ার লোকজন চোরাই কয়লার ভাগভাটোয়ারা নিয়ে নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার সময় বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাচালানীদেরকে গ্রেফতার করেনি বলে জানাগেছে।
এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মালেক বলেন- আমাদের কারো সাথে কোন সংঘর্ষ হয়নি,এলাকার লোকজন মারামারি করেছে জানতে পেরেছি। টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই আলাউদ্দিন বলেন- সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি,এব্যাপারে আমার উপরস্থ কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ, এরআগে চারাগাঁও ক্যাম্পের জংগলবাড়ি গ্রামে চোরাই কয়লা নিয়ে সংঘর্ষে ২মহিলাসহ ১২জন আহত হয় এবং লাউড়গড় সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লা নিয়ে বিজিবি ও চোরাচালানীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ ১১ রাউন্ড গুলি বর্ষন করা হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় নারী,শিশু ও বিজিবি সদস্যসহ ১৫ জন আহত হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ গং দিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু চারাগাঁও সীমান্তের চোরাই কয়লা নিয়ে পরপর ২বার সংঘর্ষ হওয়ার পরও বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারী ও চিহ্নিত চোরাচালানদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা।