সুনামগঞ্জে গ্যাং লিডারসহ ৪জন গ্রেফতারের ঘটনায় নিরীহ মানুষকে হয়রানীর অভিযোগ
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া,সুনামগঞ্জ মঙ্গলবার বিকেল ০৫:১৯, ২৪ নভেম্বর, ২০২০
সুনামগঞ্জ সীমান্ত থেকে কিশোর গ্যাং লিডারসহ ৪জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার নিরীহ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানীর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতার হওয়া কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা হলেন-সাব্বির আহমেদ (২২), জাকারিয়া আহমেদ(২৩) ও তাদের লিডার শিহাব সারোয়ার শিপু(২০)। এই কিশোর গ্যাং এর আরেক সদস্য রুবেল মিয়া(২৭) গত ১৮ই নভেম্বর সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট্র আদালতে হাজিরা দিলে তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠায় আদালতের বিজ্ঞ রিচারক। এঘটনার প্রেক্ষিতে চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার ও তার বাহিনীর সদস্যরা।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানাযায়- গত ২৯শে অক্টোরর জেলার তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট জামে মসজিদের তালা ভেংগে মোটর সাইকেল চুরি করে নেত্রকোনা পালিয়ে যাওয়ার সময় কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপু,তার দুই সহযোগী সাব্বির আহমেদ ও জাকারিয়া আহমেদকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে বিজিবি। এঘটনার প্রেক্ষিতে মোটর সাইকেল মালিক আব্দুল কাইয়ুম বাদী হয়ে ৫জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে গ্রেফতারকৃত ৩জনকে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। কিন্তু সীমান্ত কিশোর গ্যাং ও মাদক পাচাঁর সিন্ডিকেডের অন্য সদস্য সোর্স ইয়াবা কালাম মিয়া,জিয়াউর রহমান জিয়া,মোস্তাফা মিয়া ও লেংড়া বাবুল মিয়াসহ তাদের গডফাদারের বিরুদ্ধে থানায় ইয়াবা,মদ,হুন্ডি,চুরি,কয়লা ও চাঁদাবাজিসহ অস্ত্র মামলা হয়েছে। তারপরও সীমান্ত সন্ত্রাসীরা তাদের বাহিনী নিয়ে এলাকায় ওপেন রাজত্ব করার পাশাপাশি নিরীহ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করার জন্য নানান ভাবে পায়তরা করছে।
এব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার লালঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন- মোটর সাইকেল চুরির অপরাধে কিশোর গ্যাং লিডার সিহাব সারোয়ার শিপুসহ মোট ৪জন জেলহাজতে যাওয়ার পর থেকে শিপুর বাবা হাবিব সারোয়ার আজাদ ও ফুফাতো ভাই রাহাদ হাসান মুন্নাগং আমাকে মাদক,কয়লা ও অস্ত্র ব্যবসায়ীসহ ডাকাত বলে অপবাদ দিয়ে সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যা,বানোয়াটা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে। কারণ হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া তার সোর্স দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়াকে দিয়ে সীমান্ত এলাকায় চাঁদাবাজি,মাদক,অস্ত্র ও কয়লার ব্যবসা করে। সোর্স জিয়াকে দিয়ে বড়ছড়া শুল্কস্টেশনের এক ব্যবসায়ীর বৈধ কয়লা বিক্রির দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে ছেয়েছিল। আমি তাদের অন্যায় কাজ-কর্মের প্রতিবাদ করার কারণে আমার পিছু লেগেছে।
চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের কয়লা ব্যবসায়ী আজিজুল হক,দিন ইসলাম,শফিকুল ইসলামসহ আরো অনেকেই বলেন- টেকেরঘাট মসজিদ থেকে চুরি হওয়া মোটর সাইকেলসহ কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপসহ তার ২সহযোগীকে সীমান্তের বাগলী ব্রিজের ওপর থেকে বীরেন্দ্রনগর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা গ্রেফতার করেছে। আর এই সত্য ঘটনাটিকে মিথ্যা প্রমানিত করার জন্য এলাকার নিরীহ মানুষকে নানান ভাবে হয়রানী করে তাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। আমরা এলাকাবাসী তাদের হয়রানী থেকে মুক্তি চাই। এব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এব্যাপারে তাহিরপুর থানার ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলাম বলেন- চুরির মোটর সাইকেলসহ গ্রেফতার হওয়া শিহাব সারোয়ার শিপু,সাব্বির আহমেদ,জাকারিয়া আহমেদসসহ রুবেল মিয়াকে বিজ্ঞ আদালত জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এই ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিন্তু কোন নিরীহ মানুষকে অহেতুক হয়রানী করা হবেনা।