ঢাকা (ভোর ৫:৪৫) রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

সাপাহারে ৩৮ বছর পর বাড়ি ফিরলেন নুরুজ্জামান



গোলাপ খন্দকার সাপাহার(নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে নিখোঁজের ৩৮ বছর পর নুরুজ্জামান (৬০) নামে এক ব্যক্তি বাড়ী ফিরে
আসার পর পরিবারে আনন্দ-উচ্ছাসের ঢেউ বইলেও গ্রাম্য ফতোয়ার কারণে তার স্ত্রীর সাথে অদ্যবধি দেখা সাক্ষাত সম্ভব হয়নি। এমনি একটি হৃদয়
বিদারক ঘটনা ঘটেছে উপজেলার দক্ষিন আলাদীপুর গ্রামে। সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে , ওই গ্রামের মৃত-বাঘ রাজ্জাক এর নুরুজ্জামান ১৯৮২ইং সালে পারিবাকি দ্বন্দের কারণেতার বাবার উপর অভিমান করে তার স্ত্রী-সন্তান রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।নিরুদ্দেশের পর তার পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন যাবৎ অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে হাল ছেড়ে দেয়। তারা ধরে নিয়েছে হয়ত নুরুজ্জামান মারা গেছে বা কেউ মেরে ফেলেছে। নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফন বিবি সে সময় তার গর্ভের সন্তান সহ নাবালক দুই ছেলেকে নিয়ে উপজেলার কৃষ্ণসদা গ্রামে তার বাবার বাড়ীতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এক বুক আশা নিয়ে স্বামীর পথচেয়ে এখনো পর্যন্ত কোন দ্বিতীয় বিয়ে না করে সেখানেই সন্তানদের নিয়ে
বসবাস করে আসছিলো। ইতমধ্যেই তার সন্তানরা বিয়ে করে মাকে নিয়ে সংসার করতে থাকে। দীর্ঘ ৩৮ বছর পর সোমবার দুপুরে হঠাৎ করে নিরুদ্দেশ হওয়া নুরুজ্জামানের আগমন ঘটে তার নিজ পিত্রালয় দক্ষিন আলাদিপুর গ্রামে। গ্রামে ফিরে আসায় নুরুজ্জামানকে নিয়ে এলাকায় বেশ হৈচৈ পড়ে যায় । ঘটনাটি জানতে পেয়ে নানার বাড়ী থেকে তার ছেলেরা ছুটে আসে বাবাকে এক নজর দেখার জন্য । মূহুর্তের মধ্যে সেখানে বাবা-
ছেলের মধ্যে ঘটে যায় মিলনের এক অপরূপ লীলা। এই আনন্দঘন মূহুর্ত দেখার জন্য শত শত লোকজন সেখানে ছুটে আসে। নুরুজ্জামান ফিরে আসার ৩ দিন পার হলেও স্থানীয় এক শ্রেণীর ফতোয়াবাজ মাতবরদের ফতোয়ার কারণে তার স্ত্রীর সাথে অদ্যবধি সাক্ষাত কিংবা দেখা করতে পারেনি । গ্রামের ওই ফতোয়াবাজরা মতামত দেয় যে, কোন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ১২ বছর সম্পর্ক না থাকলে সে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বন্ধনের বিচ্ছেদ ঘটে ফলে তারা আর স্বামী স্ত্রী থাকেনা। এ ফতোয়ার উপর ভিত্তি করে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখা কিংবা কথা বলতে দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে নুরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি জানান , সে সময় তিনি তার বাবার উপর রাগ-অভিমান করে বাড়ী হতে বের হয়ে গিয়েছিলো। এর পর সে দীর্ঘ দিন রংপুর শহরে থেকে জীবন যাপন করতে থাকেন । ১৯৮৫ সালের দিকে আর বাসায় ফিরবেনা প্রতিজ্ঞা করে সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন করে সংসার পাতেন। এরই মধ্যে সেখানে তার সে সংসারে ৩টি ছেলের জম্ম হয়। নিজ বাসায় ফিরতে তার ইচ্ছে হলেও বিভিন্ন কারণে তার আসা হয়নি। এখন তিনি দু’টি
সংসারই রেখে নতুন করে আগের সংসারের সাথে সম্পর্ক রাখতে চান। এ বিষয়ে তার প্রথম স্ত্রী আরিফনের সাথে কথা হলে তিনি ও জানান যে
সে তার স্বামীর সাথে দেখা ও সংসার করতে চান। তবে শরিয়তের কোন বিধি নিষেধ থাকলে সেগুলি মেনে নিয়ে তিনি তার স্বামীর সাথে দেখা
করবেন বলেও জানান। এ বিষয়ে গোয়ালা ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মুকুল এর সাথে ফোনে কথা হলে বিষয়টি তিনি অবগত ছিলেননা। তবে পরে লোক মারফত বিষয়টি জানতে পারেন। ব্যাপারটি নিরসনে তাদেরকে পরিষদে ডেকে সমাধান করে দিবেন বলে জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT