সাঘাটায় মোবাইল নাম্বার রেখে বিদ্যুতের মিটার চুরি
আসাদ খন্দকার,সাঘাটা(গাইবান্ধা) রবিবার দুপুর ০৩:৫১, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের মিটার চুরি এখন নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। চোর চক্রের একটি শক্তিশালী দল গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মিটার চুরি করে তাদের ফোন নম্বর রেখে যায়। ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে বিকাশে টাকার বিনিময়ে মিটারটি আবার ফেরতও পাওয়া যায়।
মিটার চুরির সাথে পল্লী বিদ্যুতের নিজস্ব লোকজন জড়িত বলে মনে করছেন ভুক্তভুগিরা। গত ১ মাসে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম হতে প্রায় এক ডজন বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে সেচ ও চাতাল কলে ব্যবহারিত বৈদুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। মিটার চুরির পরে মিটারের স্থানে রেখে যায় চোরের মোবাইল নাম্বার। এর পরে সেই নাম্বারে যোগাযোগ করলে মোটা অংকের টাকার দাবী করেন। পরে তাদের দেয়া বিকাশ নাম্বারে টাকা দিলে চোরের দেয়া ঠিকানায় মেলে সেই চুরির মিটার।
সাঘাটা উপজেলার গোরের পাড়া গ্রামের শাহিন আলম জানান, আমার মিটার হারানোর পরে মিটারের স্থানে রেখে যাওয়া নাম্বারটিতে ফোন দেই। তারা মিটার ফেরতের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবী করে। বিষয়টি থানায় অবগত করার পরেও কোন প্রতিকার মেলেনী। এর পরে চোরের দেয়া বিকাশ নাম্বারে ৮ হাজার টাকা দেয়ার পরে আমার মিটার উদ্ধার হয়।
উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের মোখছেদুর রহমান জানান, আমার মিটার চুরির ঘটনায় থানায় জিডি করার পরে কোন প্রতিকার পাইনি। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। চোরের সাথে ৫০ বারের বেশী মোবাইলে কথা হয়েছে। তারা টাকা ছাড়া মিটার দিতে রাজি হয়নি। পরে চোরের বিকাশে ৬ হাজার টাকা দেয়ার পরে তাদের দেয়া ঠিকানায় নিদিষ্ট স্থান থেকে মিটার উদ্ধার করি।
উপজেলার কামালেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার জয়নুল আবেদীন জানান, মিটার চুরির সাথে পল্লী বিদুতের লোকজন জড়িত। কেননা ফোন নাম্বার ব্যবহার করে মিটার চুরির পরেও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না ।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজার ছানাউল্লাহ বলেন, মিটার চুরি হলে আমরা গ্রাহককে থানায় ডিজি করতে বলি। জিডি কপি জমা দিলে আবারো তাদের মিটার দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কিছুটা কম টাকা নেয়া হয় তাদের থেকে। এছাড়াও তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে কারা এই চুরির সাথে জড়িত। মানুষ সন্দেহে অনেক কিছুই বলতে পারে।
চুরি থামাতে পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে কথা বললে সাঘাটা থানার পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, যেহেতু মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। তাই তথ্য- প্রযুক্তির ব্যবহার করে চোর ধরার ব্যবস্থা করা হবে।