ঢাকা (সকাল ৯:৫৯) শনিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার Meghna News নাগরপুরে বিডি ক্লিনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবারো মারা গেছে মাদ্রাসা ছাত্র Meghna News নেপালে আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত হলেন নড়াইলের কৃতি সন্তান সোহাগ Meghna News নড়াইল জেলা ব্লাড ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত Meghna News বিএনপির সাবেক এমপির’র বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন Meghna News বিআরডিবি’র নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন মহিউদ্দিন তালুকদার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে শাশুড়ী হত্যায় অভিযুক্ত টুটুল পলাতক Meghna News গৌরীপুরে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মোৎসব পালিত Meghna News সিলেট টিটিসি থেকে ২২ বছর পর বদলী : মালিক হলেন লাল লাখ টাকার!

লোক দেখানো ইবাদত করার পরিণতি

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী Clock শনিবার রাত ০৯:৪৭, ২৯ অক্টোবর, ২০২২

মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য আল্লাহর ইবাদত করা। তবে ইবাদত বা আমল কাউকে দেখানোর জন্য হলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। লোক দেখানো ইবাদতে মানুষের জন্য রয়েছে দুর্ভোঘ শাস্তি ও ভয়াবহ পরিণতি। লোক দেখানো ইবাদত মানুষকে শিরকের অপরাধের দিকে ধাবিত করে। কেননা লোক দেখানো ইবাদতকারী ছোট শিরকের অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হয়। এক সময় একাধিক ছোট শিরক বড় শিরকে পরিণত হয়। রিয়াকারী বা লোক দেখানো ইবাদতকারীর সব আমল বরবাদ হয়ে যায়। তাই আল্লাহ তাআলার কাছে আমল কবুল হওয়ার জন্য তা হতে হবে লৌকিকতামুক্ত এবং কুরআন-সুন্নাহ নির্দেশিত। আল্লাহ তাআলা লোক দেখানো ইবাদতকারীদের সম্পর্কে বলেন- اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ یُخٰدِعُوۡنَ اللّٰهَ وَ هُوَ خَادِعُهُمۡ ۚ وَ اِذَا قَامُوۡۤا اِلَی الصَّلٰوۃِ قَامُوۡا کُسَالٰی ۙ یُرَآءُوۡنَ النَّاسَ وَ لَا یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰهَ اِلَّا قَلِیۡلًا ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা করতে চায়। অথচ তিনিও তাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে সক্ষম। যখন তারা নামাজে দাঁড়ায়; তখন আলস্যভরে দাঁড়ায়। তারা লোকদের দেখায় যে, তারা নামাজ আদায় করছে, কিন্তু আল্লাহকে তারা কমই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৪২) আল্লাহ তাআলা লোক দেখানো ইবাদতকারীর শাস্তিও বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন- فَوَیۡلٌ لِّلۡمُصَلِّیۡنَ ۙالَّذِیۡنَ هُمۡ عَنۡ صَلَاتِهِمۡ سَاهُوۡنَ الَّذِیۡنَ هُمۡ یُرَآءُوۡنَ ۙ ‘অতএব দুর্ভোগ সে সব নামাজিদের জন্য; যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে বেখবর; যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে।’ (সুরা মাউন : ৪-৬) উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ তাআলা উদাসীন ও লোক দেখানো ইবাদতকারী নামাজি ব্যক্তিদেরকে উদ্দেশ্য করে তাদের দুর্ভোগ, শাস্তি ও খারাপ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। লোক দেখানো ইবাদতের পরিণতি: আবার বাহবা পাওয়ার নিয়তে কোনো ইবাদতই গ্রহণযোগ্য নয়। নামাজ, রোজা, হজ, কোরবানি, জাকাতসহ সমাজ কল্যাণমূলক সব ভালো কাজ হবে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য।

আল্লাহ বলেন- ‘নিশ্চয়ই আমার নামাজ, কুরবানি, জীবন, মৃত্যু সব কিছুই সমগ্র বিশ্ব জাহানের মালিক আল্লাহ তাআলার জন্য।’ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোক দেখানো ইবাদতকারীকে তার ইবাদতের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

হাদিসের বর্ণনায় এসেছে- ১. হজরত মাহমুদ ইব্‌ন লাবিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি তোমাদের ওপর যা ভয় করি তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে শিরকে আসগর তথা ছোট শিরক।’ তাঁরা (সাহাবায়েকেরাম) বলল, হে আল্লাহর রাসুল! শিরকে আসগর কি? তিনি বললেন, ‘রিয়া’ (লোক দেখানো ইবাদত); আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তাদেরকে (রিয়াকারীদের) বলবেন, যখন মানুষকে তাদের ইবাদতের বা আমলের বিনিময় দেয়া হবে। তখন তোমরা তাদের (ওই সব লোকদের) কাছে যাও; যাদেরকে তোমরা দুনিয়াতে (ইবাদত করে) দেখাতে। দেখ! তাদের কাছে থেকে (লোক দেখানো ইবাদতের) কোনো প্রতিদান পাও কিনা।’ (মুসনাদে আহমদ)

২. অন্য হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করে, আল্লাহ তার বদলে (কেয়ামতের দিন) তাকে শুনিয়ে দিবেন। আর যে লোক দেখানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে (কেয়ামতের দিন) তাকে দেখিয়ে দিবেন।’ অর্থাৎ তিনি এসব লোকদেরকে কেয়ামতের দিন মানুষের সামনে অপমানিত করবেন এবং কঠোর শাস্তি দিবেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)

৩. আবার যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির পাশাপাশি মানুষের সন্তুষ্টির জন্যও ইবাদত করবে; ওই ব্যক্তির আমলও বরবাদ হয়ে যাবে। আর লোক দেখানো ইবাদতে রয়েছে শিরকের ইঙ্গিত। হাদিসে কুদসিতে এসেছে- ‘আমি অংশীদারিতা (শিরক) থেকে সব অংশীদারের তুলনায় বেশি মুখাপেক্ষীহীন। যে কেউ কোনো আমল করে এবং তাতে অন্যকে আমার সঙ্গে শরিক করে; আমি তাকে (ওই ব্যক্তিকে) ও তার আমলকে উভয়কেই বর্জন করি।’ আশার কথা হলো: কোনো ব্যক্তি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো আমল শুরু করার পর তার মধ্যে লোক দেখানোর ভাব আসে। অতঃপর সে লোক দেখানো ভাবকে ঘৃণা করে এবং তা থেকে সরে আসার চেষ্টা করে; তবে তার ওই আমল শুদ্ধ এবং গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু যদি ওই ব্যক্তি লোক দেখানো অবস্থা থেকে ফিরে না আসে বরং লোক দেখানো ভাব মনে জাগ্রত রেখে প্রশান্তি ও আনন্দ অনুভব করে। তবে (অধিকাংশ আলিমের মতে) তার ওই আমল বরবাদ হয়ে যাবে।

সুতরাং রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত পরিহার যোগ্য। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে রিয়া পরিত্যাগ করা ঈমানে অপরিহার্য দাবি। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ছোট-বড় সব ধরনের শিরক ও রিয়া তথা লোক দেখানো ইবাদত থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাকে রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। কুরআন এবং সুন্নাহ ঘোষিত লোক দেখানো ইবাদতের শাস্তি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্ত থাকতে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের দেখানো পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT