যে অভ্যাসে সহজে হবে পরিমিত ঘুম
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার সন্ধ্যা ০৬:১৪, ৩১ আগস্ট, ২০২২
আমাদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তবে সেই ঘুম হতে হবে পরিমিত। ঘুম না হওয়া যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি কম ঘুমও ক্ষতিকর।
প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক জীবনযাপন আমাদের কম ঘুম হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় কিছু সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুললে আমরা পরিমিত ঘুমের অভ্যাস গঠন করতে পারবো।
ঘুম না হওয়া বা কম ঘুম হওয়া এখন প্রায় সর্বজনীন একটি সমস্যা। আধুনিকতা আমাদের জীবনে ব্যস্ততা যেমন বাড়িয়েছে তেমনি পাল্টে দিয়েছে আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস এবং চিন্তা ভাবনা। আর এর ফলে প্রতিটি বয়সের মানুষের মাঝেই ঘুমের অভ্যাসে তারতম্য ঘটছে।
ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। কারণ ঘুমের সঙ্গে আমাদের শরীর ও মনের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পরিমিত ঘুম শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয়।
ঘুমের ঘাটতি যেমন আমাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তেমনি বিভিন্ন মানসিক সমস্যা যেমন- বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা, অযথা ক্রোধ, বিচলিত মনোভাব, হতাশা ইত্যাদি সৃষ্টি করে। তাই সব বয়সী মানুষের জন্যই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পরিমিত ঘুম নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিচে কিছু অভ্যাসের বিবরণ দেওয়া হল যেগুলো এই ব্যস্ত জীবনেও আমাদের পরিমিত ঘুম নিশ্চিত করবে-
ঘুমের সময় রুমে হালকা আলোর ব্যবস্থা করা
আলোর তীব্রতা আমাদের মস্তিষ্ককে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। সাধারণত তীব্র আলোতে আমাদের মস্তিষ্ক অধিক সক্রিয় থাকে এবং এতে ঘুম আসতে সমস্যা হয়। তাই সঠিক সময়ে ভালো ঘুম হওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত হল ঘুমের আগে রুমে একটি হালকা আলোর বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করা। এতে আমাদের মস্তিষ্ক সক্রিয়তা কমিয়ে শরীরকে ঘুমের নির্দেশনা প্রদান করে এবং দ্রুত ঘুম আসে।
আগে ঘুমাতে যাওয়া এবং ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা
অনেকেই, বিশেষ করে কিশোর এবং যুবক বয়সীরা অনেক রাত করে ঘুমাতে যায় এবং অনেক দেরীতে ঘুম থেকে ওঠে। এতে যেমন অসময়ে ঘুমাতে যাওয়ার ফলে পরিমিত ঘুম হয়না তেমনি অসময়ে ঘুম থেকে ওঠার ফলে দিনের অন্যান্য স্বাভাবিক কাজেও ব্যাঘাত ঘটে।
তাছাড়া সকালের সূর্যের আলো আমাদের শরীরে জন্য যেমন ক্যালসিয়ামের উৎস তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ইতিবাচক। তাই সব সময় পরিমিত ঘুমের জন্য আগে আগে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা প্রয়োজন।
ঘুমের আগে ইতিবাচক কিছু চিন্তা করা
ঘুমের আগে ঘুম না আসা নিয়ে দুশ্চিন্তা বা বিষণ্ণতা আমাদের মানসিক অবস্থাকে আরও বিচলিত করে এবং ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে। তাই ঘুমের আগে অনিদ্রাসহ অন্যান্য নেতিবাচক চিন্তা না করে কোনো ইতিবাচক ও সুখকর বিষয় নিয়ে ভাবুন। এতে মন প্রফুল্ল থাকবে এবং দ্রুত ঘুম আসবে।
ঘুমের আগে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার না খাওয়া
ঘুমের ঠিক আগে যেকোনো ধরণের ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- চা বা কফি পান থেকে বিরত থাকুন। ক্যাফেইন আমাদের মস্তিষ্ককে আরও সক্রিয় করতে ভূমিকা রাখে। তাই ঘুমের আগে এ ধরনের খাবার ভালো ঘুম হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘুমের বেশ আগেই স্ক্রিনিং বন্ধ করা
অনেকেই রাত জেগে টিভি দেখেন বা ঘুমোতে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনে ব্রাউজিং করেন। এটি একবারেই উচিত নয়। মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, পরিমিত ঘুম হওয়ার জন্য শোবার অন্তত আধ ঘণ্টা আগে সব ধরনের স্ক্রিনিং বন্ধ করা উচিত।
পরিমিত ঘুম শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। তাই ব্যস্ততাপূর্ণ জীবনে আধুনিকতার মাঝেও এই অভ্যাসগুলো চর্চার মাধ্যমে পরিমিত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।