মামার বাড়ি
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ০১:৫৪, ২৩ এপ্রিল, ২০২১
মামার বাড়ি
মোঃ বুলবুল হোসেন
সকালে ঘুম ভাঙতেই বেজে ওঠে মোবাইলে রিংটোন । রিসিভ করতেই মামার কন্ঠ শুনতে পেলাম। মামা বললো কে সুমন? আমি বললাম হ্যাঁ মামা। মামা বলল তুমি কেমন আছো। আমি ভালো আছি মামা। তোমার আম্মু কোথায়? আম্মু তো বাহিরে আছে। তোমার আম্মুকে ফোনটা দাও। আমি দৌড়ে গিয়ে আম্মুকে ফোনটা দিয়ে আসলাম। মামা আম্মুকে বলল অনেকদিন তো হলো আমাদের বাড়িতে আসা হয় না। জ্যৈষ্ঠ মাসে আম কাঁঠালের দাওয়াত খেতে আসো। আর মাও তোমাকে দেখতে চাচ্ছে আপা। তুমি দুলাভাই সুমনকে সঙ্গে করে নিয়ে আসো। আসা যাবে করোনার কারণে সুমনের ইস্কুল বন্ধ। সুমন অনেক দিন হলো মামার বাড়ি যেতে চাচ্ছে। ভালোই হলো তাহলে তোমার দুলাভাইকে নিয়ে দেখি কালকে আসবো। মামা বললো আচ্ছা ঠিক আছে আপা তাহলে রাখি। তোমরা কালকে সকাল সকাল এসে পড়ো।
মা এসে যখন সুমনকে বলল খুশির সংবাদ আছে। সুমান বলল মা কি খুশির সংবাদ বলোনা। তোমার মামা তোমাকে আম কাঁঠাল খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছে। শুনে খুশিতে মনটা ভরে গেল। অনেকদিন তো হলো মামার বাড়ি যাওয়া হয় না। মাকে বললাম মা তাড়াতাড়ি চল।মা বলল আজকে না কাল সকালে তোমার আব্বুকে সাথে করে নিয়ে যাব।এরপর মায়ের কথা শুনে যথারীতি সকালে খাওয়া-দাওয়া করে। বন্ধুদের সাথে খেলতে চলে গেলাম। এরপর রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে আমি শুয়ে পড়লাম।এমন সময় বাবা কাজ থেকে এসে বলল সুমন ঘুমিয়ে পড়ছে রাতে খাবার খেয়েছে । মা বলল হ্যাঁ সুমন খেয়েছে।তুমি হাত পা ধুয়ে আসো তোমার জন্য খাবার বেড়ে দিচ্ছি। বাবাকে রাতে খাওয়ার সময় মা বলতেছে জানো তোমাকে দাওয়াত দিছে সুমনের মামা। আমাদের সবাইকে কাল সকালে যেতে বলেছে।বাবা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল ঠিক আছে। সুমনা অনেকদিন হলো কোথাও ঘুরতে যায় না। সুমনের ঘোরাঘুরি হবে চলো যাই। বাবার কথা শুনে খুশি হলাম। আমি ভাবছিলাম বাবা মনে হয় যেতে চাইবে না।
পরদিন সকালে আমাদের পরিবারের সবাই মামার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিলাম।মামা আমাদের জন্য অনেক দূর এগিয়ে আসছে। মামার হাত ধরে চলে গেলাম বাড়িতে। দেখি মিম বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। মিম হলো আমার মামার মেয়ে মামা বলল মিমকে নিয়ে তুমি খেলতে যাও।আমার মামার বাড়িটা অনেক বড় আম কাঁঠাল গাছের অভাব নাই। মীম বলল ভাইয়া সামনের ওই গাছটার আম অনেক মিষ্টি তুমি গাছে ওঠে পারো।আমি আর লোভ সামলাতে পারলাম না গাছে উঠতে যাবো এমন সময় মামা দৌড়ে এসে বললো তোমার গাছে ওঠা লাগবেনা। আমি আম পেড়ে দিচ্ছি।মামা গাছে উঠে অনেক গুলো আম পেড়ে দিল।আমি আর মিম খেতে শুরু করলাম।এরপর মিম খেতে খেতে বলল জানো ভাইয়া ভর্তা করে খেতে অনেক ভালো লাগে।চলো আম্মুকে ভর্তা করে দিতে বলি আমরা খাবো। এরপর মামী আম গুলো ভর্তা করে দিলো। আমরা সবাই মিলে খেলাম।অনেক হইহুল্লোড় করে দিনটা কেটে গেল।
পরদিন সকালে মিম আমার রুমে এসে আমাকে ডেকে বলল চলো ভাইয়া আমরা আম গাছে থেকে আম পেড়ে খাবো।আমারও ইচ্ছে ছিল গাছ থেকে পাকা আম নিজের হাতে পেড়ে খাওয়ার মজাই আলাদা হবে।কাউকে না বলে মিমকে নিয়ে আম গাছের নিচে চলে গেলাম। আস্তে আস্তে গাছে উঠে গেলাম।অনেক গুলা আম পারলাম। গাছে বসে পাকা আম খেতে থাকলাম। এমন সময় খেয়াল করলাম গাছের মগডালে একটা পাকা আম দেখা যায়।আমটা অনেক লাল, লোভ সামলাতে পারলাম না। এমনকি মগডালে দিকে যেতে থাকলাম। নিচ থেকে মিম বললো ভাইয়া তুমি যেওনা পড়ে যাবে কিন্তু। কথা না শুনেই এগোতে থাকলাম। যখন মগডালে পা দিলাম। তখন মগডালটা ভেঙ্গে নিচে পড়ে গেল। আমিও মাটিতে পড়ে গেলাম। পড়া দেখে মিম কান্না শুরু করে দিল। মিমের কান্না শুনে সবাই গাছের নিচে আসলে।আমাকে ধরে উঠালো আমার পা কেটে গেছে। আমাকে নিয়ে মামা, বাবা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল ।
আমার যন্ত্রণা করছিল। আমি অনেক কান্নাকাটি করছিলাম।যখন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তারের ইনজেকশন দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিল।
আমার কারনে সবার আনন্দটা মাটি হয়ে গেল। আমার মা, বাবা, মামা অনেক কান্নাকাটি করছিল।