মাদারীপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ;টাকা লেনদেনের ভিডিও ও ছবি ভাইরাল
মীর ইমরান,মাদারীপুর শনিবার ১২:২৪, ৯ এপ্রিল, ২০২২
মাদারীপুরের ডাসারের ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বডিকন্টাকে লিবিয়া হয়ে ইটালিতে পাঠানো হচ্ছে উঠতি বয়সের ছেলেদের। আর তাদের টাকা লেনদেনের ভিডিও ও ছবি ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার সচেতন মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের নব গঠিত ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ ফরহাদ মাতুব্বর, অতি তাড়াতাড়ি বড়ো লোক হওয়ার স্বপ্নে দ্বিতীয় বারের মতো ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে, লিবিয়ার মাফিয়া চক্রের সাথে কন্টাক্ট করে ইটালিতে লোক পাঠানো শুরু করেন।
গত মাসে গোপালপুর ইউনিয়নসহ আশেপাশের এলাকা থেকে প্রায় ছাব্বিশ জন উঠতি বয়সের ছেলেকে, বডিকন্টাক্টে জনপ্রতি নয় লাখ টাকার বিনিময় পাঠানো হয়।
লিবিয়া পৌছালেই, পরিবারের স্বপ্ন পুড়ে ছাই। তারা সবাই লিবিয়ার মাফিয়া চক্রের হাতে ধরা পড়ে। আর শুরু অমানুষিক নির্যাতন। নির্যাতনের আর্তচিৎকার মোবাইলের মাধ্যমে শুনানো হয় তার পিতা-মাতাকে। আর বলা হয়, প্রত্যেকজন আরও ৮ লাখ ১০হাজার করে টাকা দিবি, না হয় এখানেই তোরা শেষ। আর মাফিয়া চক্রের হাতে আটকের ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরে এলাকায়।
ইতিমধ্যে সেই মানবপাচারের টাকা লেনদেনের ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকের মাধ্যমে। সেখানে দেখা চেয়ারম্যান নিজেই ইউনিয়ন পরিষদের তার রুমে টাকা লেনদেন করছেন।
চেয়ারম্যানের ভয়ে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, আমরা সরাসরি চেয়ারম্যানের হাতে নয় লাখ করে টাকা দেই, সে ইটালি পৌছাবে। এখন আমাদের ছেলা লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে বন্ধি। তারা অমানুষিক নির্যাতন করে আর টাকা দাবি করে।
তারা আরও বলেন, আমরা থানায় গিয়েছিলাম মামলা করার জন্য,কিন্তু আমাদের কোর্টে মাধ্যমে মামলা করতে বলেন। আর মামলা করবো, চেয়ারম্যান এ খবর শুনে আমাদের বলে, মাফিয়াদের সাথে আমার যোগাযোগ হয়। আমাকে যদি মামলায় দেওয়া হয় তাহলে তোমাদের ছেলেদেরকে কে ছাড়াবে। এখন সেই ভয়ে মামলাও দিতে পারি না। আমরা আমাদের ছেলেকে ফেরত চাই।
শুধু গোপালপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া গণমাধ্যমে জানান পুরো বিষয়।
এলাকার সুশীল সমাজের সুধীজনরা বলেন, এটা কি কাজ করলো চেয়ারম্যান। টাকার প্রতি এতো লোভ। নিজ এলাকার ছেলেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় টাকার লোভে।
ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিতে সাহস পায়না, কারণ তাদের ছেলে বন্দি। কিন্তু যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে মানবপাচারের টাকা লেনদেনের ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়েছে, প্রশাসনের কাজটা তাহলে কি? অন্য কেউ অন্য কোন বিষয় হলেতো সাথে সাথে প্রশাসন হাজির হয়ে আটক করে, তাহলে এখানে নয় কেন। গত দুইদিন আগেও এই পথে ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফরহাদ মাতুব্বরের সাথে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, আমার রুমে যে টাকা দেখছেন, এটা এক আত্মীয়ের টাকা।