মধুমতী সেতু এলাকায় উৎসবের আমেজ, মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিনিধি সোমবার বেলা ১২:২৭, ১০ অক্টোবর, ২০২২
নড়াইলের লোহাগড়ার কালনায় মধুমতী সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে এলাকায় এখন উৎসবের আমেজ। আজ সোমবার নদীর দুই পারের মানুষ জড়ো হয়েছেন কালনা প্রান্তে। আশপাশের জেলা থেকেও এসেছেন উৎসুক মানুষ। সেতুপাড়ে মানুষের ঢল নেমেছে।
এই সেতুর পূর্ব পারে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পারে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা। ধনুকের মতো বাঁকা দৃষ্টিনন্দন এই সেতু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। এটি হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ।
মধুমতী সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে লোহাগড়ার কালনা প্রান্তে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির উদ্বোধন করবেন।
উদ্বোধন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ নড়াইলে। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার মানুষও সেতু এলাকায় ভিড় করছেন। সেতুতে ওঠার চেষ্টা করছেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আপাতত তাঁদের উঠতে দিচ্ছে না।
সেতুর পাশে কথা হয় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার শিক্ষক দম্পতি আহমেদ চৌধুরী ও শিরিনা চৌধুরীর সঙ্গে। তাঁরা এসেছেন সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে, সেতু দেখতে। লোহাগড়ার চিকিৎসক দম্পতি রিফাত আরা ও তানভীর আহমেদ সকালে এসে সেতুতে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। রিফাত আরা বলছিলেন, ‘উদ্বোধনের তর আর সইছে না।’ সেতু উদ্বোধন মুহূর্ত উপভোগ করতে ঢাকা থেকে এসেছেন লোহাগড়ার হিবজুর রহমান ও বীথি রহমান দম্পতি।
সড়ক ও জনপথের (সওজ) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উদ্বোধন অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেছেন। এসেছেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন। কালনা প্রান্তে উদ্বোধন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। উদ্বোধনের আগমুহূর্তের সর্বশেষ প্রস্তুতি দেখে নিচ্ছেন তাঁরা। জেলা প্রশাসক বললেন, ‘আমরা উদ্বোধনের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের অপেক্ষায় রয়েছি।’
ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সেতু এলাকা। অধিকাংশ ব্যানার-ফেস্টুনে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজার ছবি। খণ্ড খণ্ড আনন্দমিছিল এসে পৌঁছাচ্ছে সেতু এলাকায়। নানা প্ল্যাকার্ড বহন করছেন মিছিলকারীরা।
জয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান এম এম শরিফুল আলমের নেতৃত্বে এসেছে বিশাল এক আনন্দমিছিল। নেচেগেয়ে তাঁরা আনন্দ প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, উদ্বোধনে আসতে শত শত মানুষ জড়ো হন। ইতনা ইউপি চেয়ারম্যানও এসেছেন বিশাল এক আনন্দমিছিল নিয়ে। তিনি বলেন, নড়াইলবাসীসহ এ অঞ্চলের জন্য আজ মহা আনন্দের দিন।
লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শিকদার আবদুল হান্নান বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলা থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছে এই সেতু চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে এই সেতু।
নড়াইল-২ আসনের (লোহাগড়া-নড়াইলের একাংশ) সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘নড়াইলবাসীর জন্য এক উৎসবের দিন আজ। এ সেতু নড়াইলবাসীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার সুগম করে দিল। এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। এই সেতু একসময় ছোট করে তৈরি করার প্রস্তাব গিয়েছিল একনেকে। প্রধানমন্ত্রী সেই ফাইল ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ওই সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ায় এটা প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা।’