ভূমিহীন মাখন রবিদাস সরকারি ঘর চায়
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ সোমবার বিকেল ০৫:৩৩, ১১ জানুয়ারী, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের বাসিন্দা মাখন দাস ভূমিহীন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি বসবাসের জন্য সরকারি ঘর চায়।
নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়নের মৃত নৃগেন্দ্র চন্দ্র রবিদাসের ছেলে। তার বাবারও কোন সহায়-সম্পত্তি ছিলো না। তারা লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়নের লক্ষীগঞ্জ বাজারের পাশে অন্যের জায়গায় একটা ছাপড়া ঘরে বসবাস করতো। তার বাবা নৃগেন্দ্র চন্দ্র রবিদাস মারা যাওয়ার পর কোন সম্পত্তি না থাকায় সেখান থেকে দীর্ঘদিন পূর্বে ছোট মাখন চলে আসেন ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নে নিজ মাওহা গ্রামে। এ গ্রামের নদীর পাড়ে মোস্তফা ফকিরের জমিতে আশ্রয় মিলে মাখন চন্দ্র রবিদাসের। এ জায়গায়ই তিনি বড় হয়েছেন, করেছেন বিবাহ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাসবাস শুরু করেন তিনি।
দীর্ঘদিন যাবত বসবাসের জন্যে নিজ মাওহা গ্রামে ভোটার হয়েছেন। কোন এক অজ্ঞাত কারণে বিয়ের কিছুদিন পর সেই আশ্রিত জায়গা ছাড়তে হয় মাখনকে। অন্যকোন উপায়ন্তর না পেয়ে পাশের গ্রাম মাওহা নয়ানগর ধনাঢ্য ব্যক্তি কামাল উদ্দিন মাস্টারের কাছে ছুটে যান। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর কামাল উদ্দিন মাস্টার তার বাড়ির পিছনে জিটাই নদীর ধারের নির্জন জঙ্গলে একটি ঘর নির্মাণ করে থাকার জায়গা দেন। সেখানে মাখন তাদের খেয়াঘাটে নৌকা চালায়। এই জায়গায় কোন মানুষ বসবাস করার কথা নয় কিন্তু তার কোন উপায় না থাকায় গ্রামের মানুষদের সহযোগিতায় সেই জঙ্গল পরিস্কার করে ও বিভিন্ন লোকের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে ঘর নির্মান করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোনরকমে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করে। কায়ক্লেশে এক বেলার খাবার জোগাতে পারলেও অন্য বেলায় থাকতে হয় অনাহারে। এ অবস্থার মধ্যে থাকার যে ঘরটি রয়েছে তাও জরাজীর্ণ। ভাঙ্গা টিন, প্লাষ্টিকের বস্তা ও খড় দিয়ে রকম ভাবে তার থাকার ঘরের চারপাশ ঘিরে দিনযাপন করছেন তিনি।
মাখনের স্ত্রী অনিমা রবিদাস জানান, আমার স্বামী খেয়া ঘাঠের মাঝি, বর্ষা এলে নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করে আর জুতা সেলাই করে সংসার চালায়। আজ পর্যন্ত আমাদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলেও তারা কোনরকম সাহায্য-সহযোগিতা করেনা। এহন হুনছি শেখ হাসিনার সরকার নাহি ভূমিহীনদের ঘর দিতাছে আমরা যদি একটা ঘর পাইতাম, তাহলে আজীবন শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করতাম।