পীরগাছায় অবিরাম বর্ষণে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত
নিজস্ব প্রতিনিধি রবিবার রাত ০৯:৪৪, ১২ জুলাই, ২০২০
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষনে রংপুরের পীরগাছা উপজলায় সর্বগ্রাসী তিস্তায় আবারো দ্রুতগতিতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত শনিবার ও আজ রবিবার দুপুরে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার প্রায় দুই/আড়াই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ঘর-বাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পানির তীব্র স্রোতে নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে বাধে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার।
অসহায় এই পরিবার গুলোর জন্য সরকারি ও বে-সরকারি এাণ সহায়তা চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত না হওয়ায় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। চলমান করোনা সংকটে বিপর্যস্ত এই মানুষগুলোর সাথে বন্যা ও নদী ভাঙ্গন যুক্ত হয়ে লাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এযেন, মরার উপর খরার ঘাঁ।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল থেকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদ সীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। যা অব্যাহত আছে। উজানের নেমে আসা ঢলের সাথে অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ক্রমেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতির হচ্ছে।
শনিবার ও রবিবার সরেজমিন বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দ্রুতগতিতে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুই তীরে ভাঙ্গন প্রবল আকার ধারন করেছে। প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বিস্তৃর্ণ ফসলী জমি ও বসত ভিটা।
পরিদর্শনকালে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া, জুয়ান, রামশিং, শিবদেব ও হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এবং নদী তীরবর্তি অনেকেই বন্যা ও ভাঙ্গনের হাত থেকে শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর জন্য প্রাণপন চেষ্টা চালাতে দেখাযায়। এছাড়াও বন্যা ও ভাঙনের শিকার হাজারো নিঃস্ব মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার অভাবে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত চিত্র পরিলক্ষিত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, চলতি মাসে তিস্তা নদী তীরবর্তী উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে চলে যায়। এ ছাড়া পাশের নাউয়া পাড়া এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়ায় ওই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক ঘর বাড়ি ও আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলার ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হাকিম ও তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রওশন জমির রবু সরদার বলেন, বন্যার্তদের জন্য সরকারি, বে-সরকারি ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তারা বন্যার্ত অসহায় মানুষগুলোর সংকট লাঘবে জরুরী ভিত্তিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ, ঔষধ ও আর্থিক সহায়তা দাবী জানান।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন প্রধান বলেন, বন্যার্ত ও নদী ভাঙ্গন কবলিত পরিবারগুলোকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সরকারি সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।
কোনভাবেই যেন মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি না হয় এজন্য উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।