নীলফামারীতে লক্ষীচাপ ইউনিয়নে প্রভাবশালীদের হাতে অবৈধ মাটি ও বালুর রমরমা ব্যবসা
মোঃ রেজা,নীলফামারী সোমবার রাত ০২:২৭, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
প্রভাবশালীরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক্সেভেটর যন্ত্র (ভেকু) মেশিন চালিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। এতে ওই এলাকায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা সেতুসহ অত্র এলাকার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, মাটি ও বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সবার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পুকুর খননের নামে এলাকার মোঃ আব্দুল মালেক নিজ জমিতে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। জানা গেছে, প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছাড়াই মাছ চাষের নামে পুকুর খনন করে মাটির গভীর থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করায় বিপাকে পড়েছেন পার্শ্ববর্তী আবাদি জমির মালিকরা।
এক্সেভেটর যন্ত্র (ভেকু মেশিন) দিয়ে মাটির গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় পার্শ্ববর্তী আবাদি জমি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বেশ কিছু চাষি পরিবার।
পার্শ্ববর্তী জমির চাষিরা জানান, ‘যেভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, তাতে করে আমাদের একমাত্র আবাদি জমিটি ধসে ভবিষ্যতে বালুতে তলিয়ে গেলে আমরা আর চাষ করতে পারব না। ফলে আমরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
মাটি ও বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পার্শ্ববর্তী আবাদি জমির মালিকরা বারবার নিষেধ করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করলেও লাভ হয়নি চাষিদের। জানা যায়, নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়ন পার্শ্ববর্তী বল্লমপাট গ্রামের জমির মালিক মোঃ আব্দুল মালেক অনেক দিন আগ থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে হাত করে অবৈধ উপায়ে মাটি ও বালু বিক্রি করে আসছেন।
এসব বালু ব্যবসায়ীরা আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করলেও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সরকার ২০১০ সালে মাটি ও বালুমহাল আইন পাস করলে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বাদ দিয়ে বর্তমানে ভেকু মেশিন দিয়ে পুকুর কাটার নামে পুরোদমে চালাচ্ছেন মাটি ও বালুর ব্যবসায়। এতে পার্শ্ববর্তী শত শত বিঘা আবাদি জমির ফসল নষ্টসহ আশঙ্কায় করছেন চাষিরা।
এ ছাড়া আবাদি জমি কেটে বালু উত্তোলন করার পর এসব পার্শ্ববর্তী ফসলি জমির ঊর্বরতাও নষ্ট হচ্ছে দিন দিন। অন্য দিকে প্রতিদিন ১০০-১২০টি মাটি ও বালুভর্তি ট্রলি ও ট্রাক্টর মাঠে আসা-যাওয়ার ফলে রামগন্জ-লক্ষীচাপের একমাত্র রাস্তাটির ও বেহাল দশা। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ বেলায়েত হোসেন কে সাংবাদিরা মুঠোফোনে অবগত করলে কোন পদক্ষেপ নেননি।
নীলফামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিনা আক্তারকে জানালে, তিনি বলেন এ বিষয়ে আগে কেউ অভিযোগ করেননি। দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।