নাগরপুরে শিল্প মিটার চুরির হিড়িক, মোবাইল নম্বর দিয়ে টাকা দাবি চোরদের
শাকিল হোসেন শওকত,নাগরপুর,টাঙ্গাইল শুক্রবার বিকেল ০৫:৪৬, ১১ জুন, ২০২১
টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎতের ৩ ফেইজ লাইনের (শিল্প মিটার) চুরির উপদ্রবে অতিষ্ঠ গ্রাহকেরা। গ্রাহকরা জানায় গত ৭ জুন ভোর রাতে নাগরপুরের ভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি থ্রি ফেইজ লাইনের মিটার চুরি গিয়েছে।
তবে সংঘবদ্ধ মিটার চোরদের দাবি তারা ২৫ টি মিটার চুরি করেছে। চুরি যাওয়া সব মিটার নাগরপুর থানার মধ্যে হলেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইন ভাগের জন্য বেশির ভাগ মিটার গ্রাহকেরা দেলদুয়ার জোনাল অফিসের আওতায় পড়েছে। এতে করে তাদের জিডি করতে হচ্ছে নাগরপুর থানায় আর মিটারের জন্য দৌড়াতে হচ্ছে দেলদুয়ার উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসে। করোনার প্রভাবের মধ্যেই শিল্প কারখানা বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীক ক্ষতি ও মিটারের জন্য নগদ অর্থের গুনতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।
চোরেরা মিটার বাক্সে যোগাযোগের জন্য কাগজে ফোন নম্বর এবং কত নম্বর চুরিকৃত মিটার তা লিখে রেখে গিয়েছে চোর দলটি। পরে গ্রাহকেরা নম্বরটিতে ফোন করলে তারা মিটার ফেরত দেয়ার জন্য প্রতি মিটারের জন্য ১০-১৫ হাজার টাকা ঐ নম্বরে নগদ সেবার মাধ্যমে দাবি করে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের মধ্যে কয়েক জন ৭-১২ হাজার টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত পেয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান বলেন, গত ৪ দিন হয় বিদ্যুৎ নেই। করোনায় দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ থাকা এবং গত ৪ দিন ধরে আমরা ৩৫-৪০ জন দিন মজুর কর্মহীন হয়ে পড়েছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্রতিদিন লস গুনছে।
উপজেলার পারবাইজোরা গ্রামের মা রাইস মিলের মালিক মোয়াজ্জেম বলেন, ৭ জুন রাতে আমার মিটার চুরির পর চোরদের সাথে মোবাইলে কথা বলে গতকাল ৭ হাজার টাকা দেয়ার পর তাদের কথা মত পাশের খড়ের গাদা থেকে মিটারটি ফিরে পাই।
আপর দিকে একই দিন চুরি হওয়া ১০ নম্বর ভুক্তভোগীকে মোবাইল ফোনে তার প্রতিষ্ঠান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে জানা যায়।
পুকুরিয়া বোর্ড মিলের অংশীদার মো. সাদেক বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের মিটার চুরির পরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসে গিয়ে অভিযোগ করে পুনরায় মিটার লাগিয়েছি। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এমন ঘটনা আর যাতে না ঘটে, এটাই প্রত্যাশা করি।
এ দুই উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্য মতে মোট ৭ টি মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এদের ৬ টি মিটার চুরি হয়েছে দেলদুয়ার জোনাল অফিসে অধীনে আর ১ মিটার নাগরপুর জোনাল অফিসের অধীনে। তবে মিটারগুলো পুনরায় স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। নাগরপুর ও দেলদুয়ারের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম দুজনেই ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে নাগরপুর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মো. বাহালুল খান বাহার বলেন, গত ৮ জুন নাগরপুরের মোকনা, পাকুটিয়া এলাকা থেকে ৬-৭ টি মিটার চুরির ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাগরপুর থানায় ১১ জুন ২০২১ তারিখে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।