গৌরীপুরের কৃষকরা ব্যস্ত বোরো ধান রোপণে
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ সোমবার বিকেল ০৪:৫২, ১৮ জানুয়ারী, ২০২১
হাড়কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে জমিতে চলছে বোরো ধানের জমি চাষ ও চারা রোপণের কাজ।
প্রচন্ড শীতে বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে চারা রোপণ করা পর্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটে কৃষকদের। কৃষকদের নানান সমস্যা ও সংকট থাকার পরেও ধানের চারা রোপণের জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন। এখন গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণের কাজ চলছে। কোনো জমিতে চলছে চাষ, বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে বীজ, চলছে রোপণ, সব মিলিয়ে জমিতে জোরেশোরে চলছে বোরো রোপনের আবাদ।
কৃষকেরা বলছেন, এক ফসল বিক্রি করে অন্য ফসল আবাদ করা হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ধান আবাদের উপকরণের দাম বেশী। তারপরও কৃষকেরা বেঁচে থাকার তাগিদে ঘরের ভাত খাওয়ার জন্যে হলেও আবাদ করছেন এসব ধানি জমি। আবার অনেকেই ধানের জমিতে পুকুর তৈরী করে মাছ চাষ করছেন।
গৌরীপুরে সবচেয়ে বিপাকে আছেন জমি বর্গা নেওয়া কৃষকেরা। আবাদ যাই হোক, আর ধান উৎপাদন যাই হোক নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান মালিককে দিতে হবে। নইলে জমি হাতছাড়া হবে বর্গাচাষিদের হাত থেকে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এমন সব তথ্য।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, উপকরণের বেশি থাকার কারণে শ্রমিকের মজুরিও বেশি। দৈনিক ৩৫০ টাকার উপরে মজুরি দিতে হচ্ছে। ইউরিয়া সার বস্তা প্রতি ৭৮০ টাকা, এমওপি ৭৫০ টাকা, ডিএপি ৮০০ টাকা। এর পরেও আরো অন্যান্য খরচ আছে।
কৃষকরা জানান যদি এই সারগুলোর দাম কম থাকলে উৎপাদন খরচও কমতো। কৃষকদের দাবী হচ্ছে উপজেলায় কৃষি অফিসে জনবল বৃদ্ধি করে মাঠপর্যায়ের বেশি পরামর্শ দেওয়ার। এ উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কৃষক শামছুল হক বলেন, জমি প্রস্তুত। চারা রোপণ করবো। যদি প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না হয় ভালোমতে ফসলটি ঘরে তুলতে পারি তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচতে পারবো।
বোরো ধানের বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার বলেন, কৃষকদের ভালো ফলনের জন্য কৃষি কর্মকর্তরা বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদের জন্য ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে প্রায় ২০ হাজার ৮শ ১৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হবে। তার মধ্যে উফসী ১৫ হাজার ৮শ ১৬ হেক্টর আর হাইব্রিড ৫ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে ধানের বীজ রোপণের কাজ শুরু হয়েছে, চলবে ফেব্রুয়ারির শেষ সময় পর্যন্ত। এ বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।