গৌরীপুরে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ মঙ্গলবার রাত ০৯:৩১, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে ময়মনসিংহ গৌরীপুরে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম হবির মনোনয়ন বাতিল চেয়ে মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কালীখলাস্থ উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মনোনয়ন বঞ্চিত দুই প্রার্থী আবু কাউসার চৌধুরী রন্টি ও সাদেকুর রহমান সেলিম।
সাবেক কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগ নেতা আবু কাউসার চৌধুরী রন্টি সাংবাদিকদের জানান আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে গৌরীপুরে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাওয়া শফিকুল ইসলাম হবি বিগত ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে খেঁজুর গাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। সেসময় তিনি ৪ হাজার ১ শত ৫০ ভোট পেয়ে ২য় স্থান অর্জন করেছিলেন।
এবারের পৌর নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে থেকে সারাদেশে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন না দিলেও অদৃশ্য কারণে গৌরীপুরের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হবিকে মনোনয় দেওয়া হলো। অথচ ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শফিকুল ইসলাম হবিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেন এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার জবাব দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এর প্রমাণ স্বরূপ তিনি সাধারণ সম্পাদকের শোকজ নোটিশ, তৎকালীন সংবাদপত্রের ফটোকপি, শফিকুল ইসলাম হবির নির্বাচনী পোস্টার, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মেয়র পদের ফলাফল শীট ও হবির পক্ষে বিভিন্ন কেন্দ্রে এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত কর্মীদের স্বাক্ষরসহ কাগজপত্র উপস্থাপন করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবু কাউসার চৌধুরী রন্টি বলেন, এসকল প্রমাণপত্র আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ডে উপস্থাপন করা হলেও অদৃশ্য কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট এসব কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়নি।
তারা আরও জানান, মনোনয়ন বোর্ডকে হবি জানিয়েছেন তিনি নির্বাচনের ৫দিন পূর্বে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে দলীর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। এখন প্রশ্ন হলো, যদি শফিকুল ইসলাম হবি তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতেন তাহলে তার পক্ষে কিভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হলো?
আবু কাউসার চৌধুরী রন্টি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুর রহমান সেলিম সাংবাদিকদের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন জানান, ২০০৪ সনে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। পৌর নির্বাচনে পূর্বের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হবির মনোনয়ন বাতিল করে প্রকৃত আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে শফিকুল ইসলাম হবি বলেন- অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এসব কাগজপত্র তারা মনোনয়ন বোর্ডেও উপস্থাপন করেছিলেন কিন্তু মনোনয়ন বোর্ড যাচাই-বাছাই করে এর কোন প্রমাণ পায়নি। এসময় তিনি আরো বলেন, ২০১৫ সালে পৌর নির্বাচনের পূর্বে আমার পিতার মৃত্যুজনিত কারণে আমি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চাইনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নিবার্চনের ৫দিন পূর্বে আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি। আর এসব প্রমাণপত্র মনোনয়ন বোর্ডে উপস্থাপনও করেছি।
মনোনয়ন বোর্ডের সম্মানীত সদস্য ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সমস্ত অভিযোগের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তদন্তপূর্বক এসব অভিযোগের কোন প্রমাণ না পেয়ে আমাকে মনোনয়ন বোর্ড পৌর নির্বাচনে গৌরীপুরের প্রার্থী মনোনীত ঘোষণা করেছেন।