কুড়িগ্রাম জেলায় ক্রীড়া উন্নয়ন কাজ আটকে আছে ২৫ কোটি টাকার অভাবে
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার রাত ১০:১৩, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
সাজাদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলা সদরে ক্রীড়ার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৫ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাসান লোবান জানিয়েছেন।
বুধবার(৫ফেব্রুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়ে সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাসান লোবান বিভিন্ন জনের সাথে মত বিনিময়কালে ক্রীড়ার উন্নয়ন ও সম্ভাবনা নিয়ে জানায়। কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামকে ইনডোর স্টেডিয়াম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। দর্শক গ্যালারী সংকট থাকায় তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার। রোলার স্কেটিং গ্রাউন্ড, খেলোয়াড়দের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নির্মাণ, সরকারিভাবে জেলার দুঃস্থ খেলোয়াড়দের সম্মানি ভাতা দেয়ার পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকেও সহযোগিতা প্রদান করা জরুরি, স্থানীয়ভাবে সকল চাকুরিতে খেলোয়াড়দের জন্য কোটা পদ্ধতি চালু করতে হবে। খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্রীড়ার উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে পৃষ্ঠপোষকতা আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্রীড়ার উন্নয়নে কাজ করতে হলে নূন্যতম ২৫ কোটি টাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানান। স্বল্প সময়ে কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার উন্নয়ন ও সাফল্য নিয়ে সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাসান লোবান আরও জানান, কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে স্থানীয় খেলোয়াড়দের স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে প্রতিটি প্রতিযোগিতায় জেলার খেলোয়াড়রা অংশ নিচ্ছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলোয়াড় শাহিন আলম বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ ক্রিকেট অনুর্ধ ১৯ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কুড়িগ্রাম ক্রীড়া উন্নয়ন একাডেমীর খেলোয়াড় মিঠু প্রশিক্ষণ নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ব্রাজিলে অংশগ্রহণ করেন। ফুটবল খেলোয়াড় মিঠু ও উচ্ছ্বাস বর্তমানে বসুন্ধরা কিংস্ ঢাকায় খেলছে। জেলা স্টেডিয়াম মাঠে নিয়মিত প্রশিক্ষণ হওয়ার কারণে কুড়িগ্রামের ১২ জন খেলোয়াড় ঢাকা পাইওনিয়ার ফুটবল লীগে এফসি উত্তরবঙ্গ দলের হয়ে সাফল্যের সাথে খেলেছে। ২০১৮ সালে অমল চন্দ্র কুস্তিতে রৌপ্য পদক, সাখাওয়াত আলম ও স্বপ্না খাতুন উচ্চ লম্ফে ব্রোঞ্জ পদক, সাইদ আলম দীর্ঘ লম্ফে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। উসু প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের হয়ে সুলতানা পারভীন রানী স্বর্ণ পদক লাভ করে। ২০১৭ হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় চাকুরীক্ষেত্রে আর্মি, পুলিশ, বিজিবি, নৌবাহিনী, জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের আওতায় ৩৫ জন ছেলেমেয়ে সুযোগ পেয়েছে। তিনি আরও জানান, নেপালে অনুষ্ঠিত এসএ গেমস্ এ আর্চারিতে অসীম আলম, আব্দুল হাকিম রুবেল ২০২০ সালে একক ও দলগতভাবে স্বর্ণপদক লাভ করে। ২০১৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় টুম্পা ও রিক্তা আন্তঃ জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বৈত্তভাবে স্বর্ণপদক লাভ করে।
অপরদিকে ফুটবল বিপ্লবী জালাল হোসেন লাইজু জানায়, জেলা শহরে শুধুমাত্র একটি স্টেডিয়াম মাঠ থাকায় খেলোয়াড়দের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জায়গা অধিগ্রহণ করে হলেও খেলোয়ারদের জন্য আলাদাভাবে নতুন করে আরো একটি স্টেডিয়াম মাঠ নির্মাণ করতে হবে। তিনি ক্রীড়ার উন্নয়নে জেলার সকল স্তরের সচেতন মানুষের সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন।