ঢাকা (সকাল ১০:৪১) বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইভিএম ৩০০ আসনে ব্যবহারের সক্ষমতা নেই ইসির

নির্বাচন ২২৩০ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock সোমবার রাত ০১:৪১, ৯ মে, ২০২২

জাতীয় সংসদের সকল আসনে ইভিএম-এ (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোটগ্রহণের সক্ষমতা নেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। ইসির কাছে সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণের সক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া এই মুহূর্তে নতুন করে ইভিএম কেনার তহবিলও নেই ইসির হাতে। দেশের ৩০০ আসনে ইভিএম-এ ভোট করতে হলে চলমান প্রকল্প রিভাইজ করে নতুন ইভিএম সংগ্রহ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ইভিএম ব্যবহারের কথা জানান।

গতকাল রবিবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ইভিএম ব্যবহারের কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইসির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণে তারা এই মুহূর্তে প্রস্তুত নন।

বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের হাতে এক লাখ ৫২ হাজার ৫৩৫টি ইভিএম রয়েছে। যা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে ভোটগ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানান।

তারা আরও জানান, ৩০০ আসনে ভোট করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে অন্তত আরও দুই লাখ নতুন ইভিএম কিনতে হবে। একই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক জনবলকে প্রশিক্ষণও দিতে হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই এক লাখের বেশি জনবলকে ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে। এখন এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত জনবল ১৩ হাজারের কিছু বেশি।

কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ বেশি স্থাপন করা হয়।

বিদ্যমান ১১ কোটি ৩২ লাখ ৫৮ হাজার ভোটার ধরা হলে আগামী নির্বাচনে অন্তত ৪৫ হাজারের বেশি কেন্দ্র এবং আড়াই লাখের বেশি ভোটকক্ষ হবে। এ হিসাবে প্রায় তিন লাখ ইভিএম মেশিনের প্রয়োজন হবে।

চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে আড়াই থেকে তিন শতাংশ ভোটার বেড়ে গেলে ভোটকেন্দ্র ও কক্ষের সংখ্যাও বেড়ে যাবে। এছাড়া বিদ্যমান মেশিনের মধ্যে যেগুলো অচল সেগুলো বাদ দেওয়া, কিছু মেশিন রিজার্ভে রাখা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ব্যবহার-এ তিন ক্যাটাগরিতে আরও ৫০ হাজার মেশিনের দরকার হবে। সব মিলিয়ে অন্তত আরও দুই লাখ ইভিএম প্রয়োজন হবে।

নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা শাখা সূত্রে জানা গেছে, বিগত নির্বাচন কমিশন যে দেড় লাখ ইভিএম কিনেছে সেই প্রকল্প শেষ হবে আগামী বছরের জুনে।

ইভিএম কেনার নতুন কোনও প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির কোনও কার্যক্রম নেই ইসির।

আগামী বছরের ডিসেম্বর বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করতে হলে তার দেড় মাস আগে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এ হিসাবে দেড় বছরের মধ্যে প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন ও ইভিএম কিনে সেগুলো ইসিকে বুঝিয়ে দেওয়ার কাজও শেষ করতে হবে।

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএম কিনেছে বিগত কেএম নূরুল হুদা কমিশন।

এছাড়া প্রকল্পের বাইরে আরও দুই হাজার ৫৩৫টি ইভিএম কিনেছিল ইসি। সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করায় অনেক জেলায় ইভিএমের সরঞ্জাম ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিধান যুক্ত হয়। ওই সময় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে এ বিধান যুক্ত হওয়ার পর একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের ছয়টি আসনে পুরোপুরি ইভিএমে ভোট হয়েছিল।

এরপর বিভিন্ন উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে ইভিএমে ভোট হয়েছে।

এদিকে এদিকে প্রযুক্তির প্রসারের অংশ হিসেবে ইসি ইভিএম ব্যবহারের ওপর জোর দিলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়েছে।

কেউ কেউ আশঙ্কা করেছে ইভিএমে কারচুপিরও। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, জাতীয় সংসদ ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে কি হবে না সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম কেনার বিষয়টি একটি প্রজেক্ট-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। সেই প্রজেক্টে এখন কোনও ফান্ড নেই নতুন করে ইভিএম কেনার মতো।

তিনি আরও বলেন, ইভিএমের জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে আরও মেশিন কিনতে হবে। ইলেকশন কমিশন চাইলে প্রজেক্ট রিভাইস করে হয়তো সেটা করতে পারে।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT