চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাথর ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ, গাড়ি রেখে চালক পালাতক
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন সোমবার সকাল ১১:৩৮, ১৭ জুলাই, ২০২৩
ওজনে কম দেয়ার অভিযোগে পাথর ভর্তি একটি ট্রাক রেখে পালিয়েছে ট্রাকের চালক ও তার সহকারী। এমন ঘটনা ঘটেছে আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে। শনিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে পাথর বোঝায় ট্রাকটি জেলার সদর উপজেলার বারোঘরিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সামনে রেখে সটকে পড়েন চালক ও হেলপার।
জানা যায়, সদর উপজেলার দূর্গাপুর জুম্মার মসজিদের সামনে এলজিইডি’র একটি ড্রেন নির্মানের কাজ চলমান। আর এজন্য পাথর ব্যবসায়ী ও ট্রাক মালিক শরিফুল ইসলামের কাছ থেকে পাথর ক্রয় করেন রুদ্র এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদার কোম্পানি। কিন্তু শনিবার দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শুল্ক স্থল বন্দর সোনামসজিদ স্থল বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পাথর বোঝাইকৃত (রংপুর ট-১১-০০২৭) ট্রাকটি দূর্গাপুরে কাজের স্থলে আসলে রুদ্র এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মজিবুর রহমানের সন্দেহ হয়। এ সময় তিনি ট্রাকসহ পাথরের ওজন পরিমাপ করতে চাইলে বাধে যত বিপত্তি। কারণ ট্রাকের চালক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ওজন করতে অস্বীকৃতি জানায় ও সঠিক ওজন আছে বলে ম্যানেজার মজিবুরের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ম্যানেজারো নাছোড় বান্দা। এদিকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ট্রাক চালক নিজেই স্বীকার করে নেন চালান অনুযায়ী ৫ শত কেজি ওজন কম আছে। তারপরও রুদ্র এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার বারংবার ওজন করার তাগিদ দিলে এক পর্যায়ে চালক ও তার সহযোগী দূর্গাপুর থেকে ট্রাকটি ওজনের জন্য সদর উপজেলার বারোঘরিয়া বাজার এলাকায় পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সামনে রেখে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চতুরতার সাথে সটকে পড়ে।
এ বিষয়ে রুদ্র এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মজিবুর রহমান জানান, পাথর মালিক রাজশাহীর শরিফুল ইসলামের সাথে আমাদের ব্যবসা দীর্ঘদিনের। কিন্তু কিছুদিন থেকে আমাদের সন্দেহ হয় শরিফুল ইসলাম আমাদেরকে পাথর ওজনে কম দিচ্ছেন। আর তাই আমরা ওজন করার চ্যালেঞ্জ করি। কিন্তু ট্রাকের চালক কথা কাটাকাটির পর নির্দিষ্ট ওজন থেকে ৫০০ কেজি কমের কথা স্বীকার করে ওজন করতে গেলে তার সহকারীসহ সে পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত ট্রাকটি বারোঘরিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সামনে রয়েছে।
এদিকে রুদ্র এন্টারপ্রাইজের মালিক মোকসেদ আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ রাজশাহীর শরিফুল ইসলামের কাছ থেকে বিশ্বস্ততার সহিত পাথর নিয়ে আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো করে আসছি। কোনদিনই আমি এরকম মনে করিনি যে একজন ব্যবসায়ী ওজনে কম দেবেন। কিন্তু এই ঘটনায় আমি বিস্মিত হয়েছি। শরিফুল ইসলাম পাথর ওজনে কম দিয়ে আমার অনেক ক্ষতি করেছেন। তিনি বিশ্বস্ততার বাঁধ ভেঙ্গে দিয়েছেন।
পলাতক ট্রাক চালক শহিদুল ইসলামের সাথে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে ঘটনার বিষয়ে ট্রাক মালিক ও পাথর ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজেও একজন ব্যবসায়ী। এমন ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নেই। তবে কে বা কারা আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য এমন কাজ করেছে তা খতিয়ে দেখছি। আর যেহেতু আমার ট্রাক চালক ও তার সহযোগী সমস্যা করে গাড়ি রেখে পালিয়ে এসেছে সেহেতু তাদের খুঁজে বের করে এই সমস্যার সমাধান করা হবে দ্রুত।