বড়লেখায় ইউপি সদস্যের মোবাইল চুরির অভিযোগে কলিম উদ্দিন কারাগারে প্রেরণ
ইবাদুর রহমান জাকির, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার রাত ১০:১৩, ২৭ অক্টোবর, ২০২২
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ৩নং নিজবাহাদুর পুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউ/পি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুর গত ১২ অক্টোবর ইংরেজি সকাল ৭টার সময় বসত ঘরের ভিতরে ডুকে পূর্ব মাইজগ্রাম (নয়াবস্তি) গ্রামের তছির আলীর পুত্র কলিম উদ্দিন ইউ/পি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুরে (মেম্বারের) ব্যবহৃত মোবাইলটি নিয়ে যায়, গত ১২ অক্টোবর ইউ/পি সদস্য বড়লেখা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন, উক্ত ডায়েরির প্রেক্ষিতে গত১৩ অক্টোবর বড়লেখা থানা পুলিশ কলিম উদ্দিন কে জিজ্ঞাসাবাদ করে কলিম মোবাইল চুরির দায় স্বীকার করেন , গত (১৬ অক্টোবর) কলিম উদ্দিনের বড় ভাই ছইদুর রহমান বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুর ও তার ছোট ভাই রাজু আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্যাতনসহ ভিন্ন অপবাদ উল্লেখ পূর্বক, তাছাড়া গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুরের ছোটভাই রাজু আহমদ কলিম উদ্দিন কে আসামী করে, থানায় মামলা করেন, মামলার পেক্ষিতে পুলিশের এসআই জাহেদ আহমদের নিকট ১৩ অক্টোবর কলিম উদ্দিন স্বীকারোক্তি দেন মোবাইল অপহরণ করছেন বলে, পরে চুরির মামলাটি রজু করা হয়েছে।
এদিকে কলিম উদ্দিন যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার এলাকাবাসীর ব্যানারে গুটি কয়েকজন লোক মানববন্ধন করেন ও ভিন্ন সামাজিক মিডিয়ায় অপপ্রচার চালান। রহস্যজনক কারণে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অপরাধী হলে তাহাকে আইনের আওতায় আনা হোক সচেতন মহলের দাবী।
থানা কমপ্লেক্সে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়ে বড়লেখা থানা পুলিশের এসআই (উপ-পরিদর্শক) জাহেদ আহমদ বলেন, ‘আমি ঐ যুবককে ধরে থানায় আনি নাই। রাজু ওই যুবককে থানায় নিয়ে আসছে। ঐ যুবককে থানায় কোনো মারধর করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মনে হয়েছে সন্দেহ জনক রহস্য। একেক সময় সে একেক কথা বলছে। পরে মেম্বারের ভাই রাজু তাক নিয়ে চলে যায়। এরপর ১৬ অক্টোবর ঐ যুবকের পরিবার আদালতে মামলা করেছে বলে শুনেছি। পরে ১৮ অক্টোবর রাজু আহমদ বাদী হয়ে থানায় ঐ যুবকের নামে চুরির মামলা করেন। মামলাটি আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপর আমি আমি তদন্ত সাপেক্ষে তথ্যসহ চুরি হওয়া মোবাইলটি ও উপজেলার সৎপুর গ্রামের দেলওয়ার হোসেনের ছেলে ফাইদ আহমদ (২০) নামে একজন আসামী গ্রেফতার করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুর বলেন, আমার মা বলছেন আজ ভোরবেলা কলিম আমাদের বাড়িতে এসেছিল, গুরি গুরি বৃষ্টি হওয়াতে কলিম কাজ না করে আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তোমার রুমের দিকে চলে যায়, অতপর ৮.৩০ মিনিটের সময় আমি তাকে ফোন দিয়ে বাড়িতে আসতে বলি। এবং সে অল্প সময়ের মধ্যে চলে আসে, তখন আমি ও আমার ভাই রাজু ও অটোরিকশা (সিএনজি) চালক সুলতান আহমদের উপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞেস করি কলিম তুমি কি আমার মোবাইল নিয়েছো, তখন আমাদের বাড়িতে আসার কথা স্বীকার করলেও মোবাইল নেওয়ার কথা স্বীকার করেনি, আমারা তোমার নামে থানায় মামলা দিবো এ কথা শুনে কলিম উদ্দিন আমাদের কাছে একদিন সময় চায়, আমরা একদিনের ভিতরে মোবাইল টি পাওয়ার আশায় তাকে সময় দেই, কিন্তু দিন হতে রাত ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা পূর্বক তার পিতাসহ পরিবার কে অবগত করি, পরিবার থেকে সন্তোষ্ট চিত্তে কোন জবাব না পাওয়াতে বড়লেখা থানা পুলিশ কে মোবাইল চুরির বিষয়টি অবগত করি,
সে বড়লেখা থানা পুলিশের কাছে মোবাইল ফোন টি নেওয়ার বিষয়টি সে স্বীকার করেছে। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তাকে অন্য কেউ যদি মারে আমি জানি-না। আমি ও আমার ছোট রাজ তারে টাচউ (স্পর্শ) করি নাই পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে কি করেছে এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বড়লেখা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, মামলাটি রেকর্ড হয়েছে তদন্তের আলোকে আমরা মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছি ও এক জন আসামী গ্রেফতার করেছি।
গত ১৬ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশে প্রেরণ করেছেন।, ২৬ অক্টোবর মোবাইল চুরি অপরাধের মামলায় কলিম উদ্দিন বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিকট জামিন চাইলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে আসামী হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।