চাঁপাইনবাবগঞ্জে একই নামে দুটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়;বিভ্রান্তিতে অভিভাবকরা
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৃহস্পতিবার রাত ০১:০০, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজের দায়ে; বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই নামে স্কুল প্রতিষ্ঠার অভিযোগ উঠেছে। আর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদাণ করেছেন বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খানের নিকট এই স্মারকলিপি তুলে দেন সুইড বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের একাংশের অভিভাবকবৃন্দ।
এ বিষয়ে সুইড বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের একাংশের অভিভাবক, নির্বাহী কমিটি ও স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে একই নামে দুটি বিদ্যালয় চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকায়। একটি ক্যাম্পাস ২ নং ওয়ার্ডের ফুড অফিস মোড় এলাকায় এবং অন্যটি ১৫ নং ওয়ার্ডের ইসলামপুর মহল্লায়। আর মূল বিদ্যালয় থাকাকালীন ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারী এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক কাজের দায়ে; পুলিশ তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান আসাদকে আটক করে। পরে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে বহিষ্কার করে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, বরখাস্ত হবার পর নতুন করে একই নামে সুইড বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় খুলে বসেন শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদ। এমনকি মূল বিদ্যালয়টি দখলের নানারকম পায়তাঁরাও করছেন তিনি। এছাড়াও মূল প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক ও নির্বাহী কমিটিকে হয়রানি করতে; আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন বরখাস্ত শিক্ষ আসাদ। তাই এর প্রতিকার পেতে ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে যেতে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
অভিভাবকরা বলেন, একই নামে স্কুলের সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে শিক্ষার্থীবিহীন বিদ্যালয় পরিচালনা করতে ব্যর্থ হলে; আসাদুজ্জামান আসাদ মূল স্কুল দখলে নিতে নানারকম অপপ্রয়াস চালাতে থাকে। এমনকি ২০২১ সালে এনিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিলে ছাত্রদের নতুন বই পেতে বিঘ্ন হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদকে বাদ দিয়ে; বিদ্যালয়ের নির্বাহী কমিটির নির্বাহী সচিব মোহা. হান্নান হোসাইনকে; স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করেন। অথচ সেই আদেশও মানেননি আসাদুজ্জামান।
তবে আসাদুজ্জামান আসাদ সরাসরি সাক্ষাত করতে না চেয়ে; সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানটিই সঠিক রয়েছে। ভুল তথ্য দিয়ে মূল প্রতিষ্ঠানের কিছু অংশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন করে ফুড অফিস মোড়ে একই নামে; অর্থাৎ সুইড বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের নামে স্কুল খুলে পাঠদান শুরু করেন আম্বিয়া খাতুন মিলি।
এ বিষয়ে সুইড বাংলাদেশের মেন্টর জওয়াহেরুল ইসলাম মামুন জানান, প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। যাতে তিনি আটক হয়েছিলেন। তবে এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত গিয়ে; আমরা ওই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে কথা বললেও তারা মুখ খুলেনি। আমরা দুটি প্রতিষ্ঠান এক করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
তবে জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান জানান, সুইড বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের নামে কয়েকজন অভিভাবক আমার কাছে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যত জীবনের দিক বিবেচনায় সুষ্ঠু সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবকবৃন্দ। স্মারকলিপি প্রদানের সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, অভিভাবক বিলকিস খাতুন, নাসিমা খাতুন, জান্নাতুল খাতুন, সায়েরা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।