গৌরীপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের খবর জানেন না বীর মুক্তিযোদ্ধারা
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ রবিবার রাত ১০:৩৬, ১৩ জুন, ২০২১
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নে তাত্রাকান্দা গ্রামে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সৌধ স্মারক নির্মাণের খবর জানতেন না স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
শনিবার (১২ জুন) দুপুরে উদ্বোধন করা হয়েছে নবনির্মিত এ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সৌধ স্মারক। এ উদ্বোধনের বিষয়ে অবগত নন স্থানীয় অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
উদ্বোধনের পর এ স্মৃতি সৌধের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসলে ঘটনাটি সকলের নজরে আসলে সচেতন মহলে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।এদিকে উল্লেখিত স্থানটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতি বিজরিত না হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কেন কার স্বার্থে এ স্মৃতি সৌধ নির্মিত হল ? কার কাছে এটি হস্তান্তর করা হল ? কে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করবে ?- তা অজানাই থেকে গেলো।
এক্ষেত্রে সরকারের ৩৩ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে এ মহৎ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তর এলজিইডির লুকোচুরির ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বর্তমানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহিম জানান, এ স্মৃতি সৌধ নির্মাণের বিষয়ে তিনি অবগত নন। শনিবার বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে তিনি ঘটনাটি জানতে পারেন।
তিনি আরও জানান, উল্লেখিত তাত্রাকান্দা এলাকাটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি। সেখানে কেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সৌধ স্থাপন করা হল বিষয়টি বোধগম্য নয়। আরও কয়েকজন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ বিষয়ে তাদেরকে কেউ অবগত করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ বলেন,‘এ স্মৃতি সৌধ নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জানেন।আপনারা উনার কাছ থেকে তথ্য নেন।’
উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মোঃ ওয়াহেদুল হক জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৩ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে এ স্মৃতি সৌধ নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। উদ্বোধনের পর এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
স্মৃতি সৌধ নির্মাণের স্থানটি কি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এলাকা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,স্থানীয় একজন ব্যক্তির দান করা জমিতে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্মৃতি সৌধ নির্মাণ বিষয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীকে অবগত করা হয়নি কেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।