সিলেটের করোনার পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে
মোঃ কামরুজ্জামান শুক্রবার সন্ধ্যা ০৭:৩৪, ২৪ এপ্রিল, ২০২০
মোঃ ইবাদুর রহমান জাকির, সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট বিভাগে শনাক্ত হওয়া ৩৩ জন রোগীর মধ্যে সিলেট জেলায় ছয়জন, হবিগঞ্জে ১৮ জন, মৌলভীবাজারে তিনজন ও সুনামগঞ্জে ছয়জন রয়েছে। সিলেটে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৫ এপ্রিল। এর পর বেশ কয়েক দিন সিলেটে আর মেলেনি নতুন কোনো রোগী। গত রবিবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে আক্রান্ত ছিলেন ১০ জন। কিন্তু সোমবার এক সঙ্গে শনাক্ত হন ১০ জন। আর গত বুধবার ধরা পড়ে আরও ১৩ জন। হঠাৎ করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘স্টেজ ফোর’ বা ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে সিলেট। এ অবস্থায় সংক্রমণের উৎস খুঁজে বের করা সম্ভব হবে না। দিন দিন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। এ থেকে রক্ষা পেতে ঘরে থাকার আর কোনো বিকল্প নেই। গত ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী ছিলেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন। এর পর সিলেটে করোনাভাইরাস শনাক্ত পরীক্ষা শুরু হলেও কয়েক দিন নতুন কোনো রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ডা. মঈন কীভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন তা এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ডা. মঈনের করোনা শনাক্ত হওয়ার দিন (৫ এপ্রিল) মৌলভীবাজারের আরেক মৃত ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি জানায় আইইডিসিআর। ওই ব্যক্তি কার সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তা শনাক্ত হয়নি। এর পর থেকে চিকিৎসকরা সিলেটে করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের আশঙ্কা করছিলেন। গত তিন দিনে সিলেট বিভাগে ২৩ রোগী শনাক্ত হওয়ায় সেই আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে। করোনা চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন সিলেট এখন ‘স্টেজ ফোর’-এ অবস্থান করছেন। তাদের মতে, এ ধাপটি হচ্ছে খুবই খারাপ। সংক্রমণের ক্ষেত্রে এর পর আর কোনো ধাপ নেই। এ ধাপে ভাইরাসটি এমনভাবে ছড়ায় তখন কোনো পয়েন্ট বা লিংককে আলাদা করা যায় না তখন সংক্রমণের উৎস খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে মানুষ থেকে মানুষের দেহে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। সিলেট বিভাগে এখন পর্যন্ত যে ৩৩ জন আক্রান্ত পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগেই সংক্রমণের উৎস খুঁজে পাননি সংশ্লিষ্টরা। এতে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই করছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, একটি দেশ বা অঞ্চলের মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার চারটি ধাপ রয়েছে। যে ধাপগুলোর মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে একটি দেশ বা এলাকায় করোনা ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে চতুর্থ ধাপ বা ‘স্টেজ ফোর’ হচ্ছে শেষ ধাপ বা ভয়ানক ধাপ। বর্তমান পরিস্থিতি বলছে সিলেট ‘স্টেজ ফোরে’ রয়েছে। এখন ঘাতক এ করোনাভাইরাস থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ঘরে থাকা ছাড়া আর কোনো রাস্তা খোলা নেই। তাই নিজেকে এবং পরিবারকে কভিড-১৯ থেকে বাঁচাতে সবাইকে ঘরে থাকা উচিত। সিলেট বিভাগে শনাক্ত হওয়া ৩৩ জন রোগীর মধ্যে সিলেট জেলায় ছয়জন, হবিগঞ্জে ১৮ জন, মৌলভীবাজারে তিনজন ও সুনামগঞ্জে ছয়জন রয়েছে।