ঢাকা (রাত ৪:৫৪) রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News লোহাগড়ায় ন্যাশনালিষ্ট ব্লাড ব্যাংকের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান Meghna News ট্রমালিংক ১০ বছর পূর্তিতে মতিন সৈকত এআইপিকে সন্মাননা Meghna News সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ একগুচ্ছ সুপারিশ সংস্কার কমিশনের Meghna News গণহত্যায় অভিযুক্ত আ.লীগের কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না Meghna News বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন Meghna News সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের বিনিময়ে জান্নাত! Meghna News আল্লাহর পথে আহ্বানকারীর জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার Meghna News ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত সংস্কার করবো: ভিসি আমানুল্লাহ Meghna News গৌরীপুরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনা Meghna News স্বামীর মধুময় স্মৃতি রোমন্থনে দিন কাটছে স্ত্রী মারজিনার

সিলেটী ৪২ জন কানাডার যাত্রী বিমানবন্দর থেকে ফেরত নিয়ে তোলপাড় !!

আবুল কাশেম রুমন আবুল কাশেম রুমন Clock বুধবার সকাল ০৯:০৯, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩

সম্প্রতি ৭ই নভেম্বর ২০২৩ ইং ধরে কানাডা যাওয়ার পথে ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান কর্তৃপক্ষ ৪২ সিলেটিকে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় সিলেট জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বৈধ ভিসা সত্ত্বেও তাদেরকে যেতে বাধা দেওয়ায় তোলপাড় চলছে। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ছাড় দিলেও বিমান আটকে দেয়ার ঘটনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই বিমান কর্তৃপক্ষের এই এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তবে কানাডাগামী ফ্লাইটের ৪২ যাত্রীকে অফলোডের ব্যাপারে বক্তব্য দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত বক্তব্য প্রেরণ করেন।
তাহেরা খন্দকার জানান, বিমানের সিলেট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ যাত্রীদের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখতে পান ৪২ জন যাত্রী একই ব্যক্তির আমন্ত্রণ পত্রের মাধ্যমে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে  যোগদানের উদ্দেশ্যে কানাডা যাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক ভাবে ডকুমেন্টসমূহ পর্যালোচনা করে সন্দেহ হওয়ায় সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রীর ডকুমেন্ট ঢাকাস্থ পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটে (পিসিইউ) প্রেরণ করা হয়।
উক্ত ইউনিট ডকুমেন্টসমূহ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দিল্লিস্থ কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির (সিবিএসএ) নিকট  প্রেরণ করলে প্রথমে তারা জানায় সিবিএসএ এর সিস্টেমে যাত্রীর তালিকায় যাত্রীর তথ্য সঠিক রয়েছে। ফলে সিলেট থেকে যাত্রীদেরকে বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করা হয় এবং যাত্রীগণ ঢাকায় পৌঁছান। ইতোমধ্যে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি থেকে আবার জানানো হয় যাত্রীদের আমন্ত্রণ পত্রের তথ্যের সাথে থাকার (আবাসন) বিষয়ে সিস্টেমে গরমিল রয়েছে। যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রে হোটেলে থাকার কথা থাকলেও যাত্রীদের কাছে রেন্টেড হাউজ এর ডকুমেন্ট পাওয়া যায়। কানাডিয়ান আইন অনুযায়ী একটি রেন্টেড হাউজে ৪২ জন যাত্রী থাকার  কোন নিয়ম নেই এবং তা  Fire code violation বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
পরে যাত্রীদের ডকুমেন্টসমূহ ও কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির বার্তা পর্যালোচনা এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শক্রমে ৪২ জন যাত্রীকে ৭ নভেম্বর টরন্টো ফ্লাইট থেকে অফলোড করা হয়।
তিনি জানান, ঢাকাস্থ পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) এর মাধ্যমে যাত্রীবৃন্দের তথ্যাদি সিবিএসএ এর নিকট প্রেরণ করা হয়েছে এবং সিবিএসএ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে উল্লিখিত যাত্রীদের ভিসা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট যাত্রীদেরকে ইমেইলে সিদ্ধান্ত জানাবে।
এ ঘটনার পর যাত্রীদেরকে হোটেল অফার করা হলে তারা হোটেলে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন। টরন্টো ফ্লাইটে না পাঠানোর বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হলে তারা বিষয়টি অনুধাবন করেন। পরবর্তীতে ইমিগ্রেশন হতে তাদের বহির্গমন সিল বাতিল করে ব্যাগেজ বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং যাত্রীগণ নিজেদের মত এয়ারপোর্ট ত্যাগ করেন।
তিনি আরো জানায়, যাত্রীর নিকট যথাযথ ডকুমেন্ট না থাকলে বা এ ধরনের ভায়োলেশনের জন্য কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাত্রীপ্রতি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সকে ৩২০০-২০,০০০ কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করতে পারে।
বিমানসূত্রে জানা গেছে, ওই যাত্রীরা যেতে না পারায় প্রায় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বিমানের। এ ক্ষতি  পোষাতে বিমানের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনার পর সিলেট এসে যাত্রীদের ডাকলেও তারা সাড়া দেননি।
গত ১০ নভেম্বর বৈধ ভিসা পেয়ে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন তারা। পরে কানেকটিং ফ্লাইটে ঢাকায় যাওয়ার পর কানাডাগামী বাংলাদেশ বিমানে ওঠার সময় তাদের আটকে দেয় বিমান কর্তৃপক্ষ। রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর থেকেই সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে সামাজিক মাধ্যম থেকে নিয়ে চায়ের স্টলে। সবাই বলছেন, অন্যদেশে যেখানে বিমানবন্দরে দেশি যাত্রীদের বিদেশ গমনে আলাদা সহায়তা করা হয় সেখানে বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম। দীর্ঘ দিন ধরে বিমান যাত্রীরা বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি নিয়ে অভিযোগ করে আসছেন। বিমান কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়মের বাইরে গিয়ে অহেতুক যাত্রীদের জেরা করে হয়রানি করে। শুক্রবারের এই ঘটনাটি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ইমিগ্রেশন শেষ করে সব কাজ সম্পন্ন করার পর কোন এখতিয়ারে বিমান তাদের আটকায় তা একটি বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, এটা তাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। বৈধ ভিসা থাকার পরও বিমান তাদের সাথে অবিচার করেছে। তাদের কাগজপত্রে যদি কোনো ত্রুটি থাকতো তবে কানাডা বিমানবন্দর নামার পর সেখানকার ইমিগ্রেশন এই ব্যাপারটি দেখার বিষয়। এই ৪২ জনের সাথে ৪২টি পরিবারের স্বপ্ন জড়িত ছিল, কিন্তু বিমান যা করেছে তা ঠিক হয়নি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, তাদের ভিসা যদি বৈধ হয়ে থাকে তবে বিমানের আটকানোর বা ভিসার কাগজ দেখার এখতিয়ার নেই। বিমান কেবল ভিসা বৈধ কিনা তা দেখতে পারে। তিনি বলেন অনেক সময় এম্বেসি থেকে ভিসা বাতিলের জন্য ইমেইল করে থাকে, যা অনেক যাত্রী লুকিয়ে রাখেন। অনেকের পাসপোর্টে ভিসা থাকে কিন্তু পরে এম্বেসি ভিসা বাতিল করে ইমেইল দিয়ে থাকে, যা বিমানবন্দরে চেক করলে ধরা পড়ে। যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের বেলায় এমন হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। এটা কেবল বিমান নয় যে কোনো এয়ারলাইন্সের বেলায়ই হতে পারে। যদি এই ৪২ জনের বেলায় ভিসা বাতিল করা হয়েছে এমন ইমেইল না এসে থাকে তবে তাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ভিসা প্রদান একটি দেশের নিজস্ব ব্যাপার। ভিসার কাগজপত্রে যদি কোনো সমস্যা থাকতো তবে তা কানাডা নামার পর সেখানকার বিমানবন্দরে তাদের ইমিগ্রেশনের বিষয়। ভিসা কীভাবে পেলো এটা বিমান কর্তৃপক্ষের দেখার এখতিয়ার নেই। বৈধ ভিসা নিয়ে ভ্রমন করতে না দেওয়া বিমানের অন্যায় হয়েছে। এতে দেশের ভাবমূতি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যারাই প্রবাসে যান তারা অনেক স্বপ্ন নিয়ে যান। এর সাথে অনেক পরিবারের স্বপ্ন এবং দেশের রেমিট্যান্সের ব্যাপারও জড়িত। তাই বিষয়টি ঠিক হয়নি।

এদিকে, অনেকে বলছেন বিমানবন্দরে বিদেশ যাত্রীদের এ ধরনের হয়রানি অহরহ ঘটছে। তারা অভিযোগ করেন, অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ায়ই বিমানের অসাধু লোকজন এটা করেছে। তাই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। তারা বলেন ভিসা দিয়েছে কানাডা, ভিসায় কোনো সমস্যা থাকলে কানাডা নামার পর কানাডিয়ার ইমিগ্রেশন এটা দেখবে। বিমানের দায়িত্ব কেবল যাত্রী বহন, যাত্রীর ভিসা বৈধ কিনা তারা কেবল এটা দেখবে। কিন্তু বৈধ ভিসা থাকার পর তারা কেন এটা করলো? সঠিক তদন্ত করলেই তা বেরিয়ে আসবে।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT