শিক্ষিত প্রতিবন্ধী তরুণীকে চাকরি দিয়ে সর্বস্তরের প্রশংসা কুড়িয়েছেন মেজর মো. আলী(অব.)
এইচএম দিদার,কুমিল্লা বৃহস্পতিবার বিকেল ০৫:১৯, ১৩ জানুয়ারী, ২০২২
ভাজরা গ্রামের শিক্ষিত তরুণী অনিতার চাকরি একটি মাইলফলক অধ্যায়!
দাউদকান্দি উপজেলার ১নং সদর উত্তর ইউনিয়ন এর ভাজরা গ্রামের অনিতা নামের প্রতিবন্ধী অনিতা নামের এক শিক্ষিত তরুণীকে জুরানপুর করিমুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি দিয়ে একটি ইতিহাস গড়লেন ভূঁইয়া পরিবার।
বিগত ১ বছর আগে এই প্রতিবন্ধী তরুণীকে দেখতে সরেজমিনে ভাজরা ছুটে যান উপজেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান মেজর(অব.) মোহাম্মদ আলী স্যার। তিনি সেখানে গিয়ে এই তরুণী ও তার বাবা-মাকে কথা দিয়েছিলেন যে তাকে একটি চাকরি দিবেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর মোহাম্মদ আলী (অব.)।
অবশেষে সেই কথা বাস্তবায়ন হলো,কথা দিয়ে কথা রাখলেন মানবিক এই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
১১ জানুয়ারি ২০২২ সকালে, জেনারেল ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান দাউদকান্দি–মেঘনার নারী জাগরণের অগ্রদূত কুমিল্লা-১ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল(অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া’র সহধর্মিণী বেগম মাহমুদ ভূঁইয়া নিজে উপস্থিত থেকে জুরানপুর করিমুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষিত তরুণী অনিকাকে।
আবেগঘন এক পরিবেশে বেগম মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, ছোটবেলায় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনিকা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে যান, তবে জীবন যুদ্ধে দমে যাননি। নিজেকে সমাজের বোঝা হিসেবে না দেখে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করে নিজেকে যোগ্য এবং শিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আজ তার মতো একজন জীবন যুদ্ধে হার না মানা নারীর যোদ্ধাকে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে চাকরি দেয়ার সুযোগ পেয়ে আমরা ভূঁইয়া পরিবার গর্বিত এবং নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর মোহাম্মদ আলী (অব.) জানান, গত এক বছর পূর্বে করোনাকালীন সময়ে দাউদকান্দি সদর উত্তর ইউনিয়ন এর ভাজরা গ্রামে যখন কর্মহীন মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা বিতরণ করতে যাই, তখন, অনিকাকে প্রথম দেখতে পাই। নানা সংকীর্ণতায় একজন নারী নিজেকে সমাজের বোঝা হিসেবে না রেখে আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মত নিজেকে সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আমি তখন কথা দিয়েছিলাম যে এমন একজন যোদ্ধা নারীকে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ করে দিতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব। মহান আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি যে অবশেষে তাকে সামাজিক মর্যাদা এবং নিজেকে স্বাবলম্বী করার জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পেরেছি।
পরবর্তী প্রজন্ম এই অনিকাকে দেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে যে একজন মানুষের যদি শারীরিক অক্ষমতা থাকে, তা শর্তেও কিভাবে নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা যায়।