লিটন ও মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে স্বস্তিতে ১ম দিন শেষ করলো বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০২:০৫, ২৪ মে, ২০২২
দিনের শুরুটা ছিল চরম হতাশার। স্কোরবোর্ডে ২৪ রান তুলতেই বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেট। স্কোরবোর্ডে যখন হতাশার মেঘ তখনই আশার আলো দেখালেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। শুরুর ধাক্কা সামলে দুজন মিলে দাপট দেখালেন পুরো দিন। দুজনেই পেলেন সেঞ্চুরির দেখা। লিটন-মুশফিকের রেকর্ড গড়া জুটিতে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।
সোমবার টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৭৭ রান। দিন শেষে উইকেটে ১৩৫ রানে অপরাজিত লিটন। তার সঙ্গে ১১৫ রানে আছেন মুশফিকুর রহিম।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভার কাসুন রাজিথার ফুল লেন্থের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু, তাকে ফাঁকি দিয়ে গিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। শূন্যতেই শেষ হয়ে যায় তরুণ এ ওপেনারের ইনিংস। ছয় টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে চতুর্থবার শূন্যতে ফিরলেন জয়।
জয়ের ধাক্কা না সামলাতেই হতাশায় ডোবান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল। আসিথা ফার্নান্দোর বলে ফ্লিক করার চেষ্টা করেন তামিম। টাইমিং ঠিক হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল লেগে যায় পয়েন্টে। দারুণ ক্যাচ নিয়ে তামিমকে শূন্যতে বিদায় করেন জয়াবিক্রমা।
দুই ওপেনারকে হারানোর চাপ সামলাতে পারেননি মুমিনুল হকও। প্রতিপক্ষকে উইকেট তুলে দিয়ে ৯ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর চাপের মধ্যেই নাজমুল হাসান শান্ত ও সাকিব আল হাসানকেও হারায় বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ২৪ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়ে খুব বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে বিপদ কাটাতে প্রথম সেশনের বাকি সময় সামাল দেন মুশফিকুর রহিম।
প্রথম সেশনে মোট ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৫ রান তোলে বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথম ঘণ্টায় আসে ৩১ রান। বাকিটা আসে দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায়।
তবে প্রথম ঘণ্টার ধাক্কা সামলে নিয়েই জুটি গড়ে ফেলেন মুশফিক ও লিটন দাস। দুজন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন রেকর্ড জুটি, ভাঙেন ১৫ বছর আগের রেকর্ড। ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পি সারা ওভারে মোহাম্মদ আশরাফুলের সঙ্গে ১৯১ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিক। এতদিন পর্যন্ত ষষ্ঠ উইকেটে এটাই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই আজ সেই ১৫ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ডের জন্ম দেন লিটন-মুশফিক।
দিনের দ্বিতীয় সেশনে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন দুজন। এরপর তৃতীয় সেশনে দুজনেই পান সেঞ্চুরির দেখা। তৃতীয় সেশনে দিমুথ করুনারত্নের বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে সেঞ্চুরির ঘরে পৌঁছে যান লিটন। সেঞ্চুরি করতে লিটন খেলেছেন ১৪৯ বল। আর শতকটি সাজানো ছিল ১৪টি বাউন্ডারি দিয়ে।
লিটনের কিছুক্ষণ পর সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মুশফিক। লঙ্কান বোলার রমিশ মেন্ডিসের বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিন অংকের ঘর স্পর্শ করেন মুশফিক। ২১৮ বলে ১১টি বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার সেঞ্চুরি। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরি।
সেঞ্চুরির পর দিনের বাকি সময় বেশ নির্ভার হয়েই খেলেন মুশফিক-লিটন। কোনো উইকেট হারাতে না দিয়ে অবিচ্ছেদ্য থেকেই প্রথম দিন পার করেন দুই ব্যাটার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৮৫ ওভারে ২৭৭/৫ (জয় ০, তামিম ০, শান্ত ৮, মুমিনুল ৯, মুশফিক ১১৫*, সাকিব ০, লিটন ১৩৫*; রাজিথা ১৯-৫-৪৩-৩, আসিথা ১৭-২-৮০-২, জয়াবিক্রমা ২৯-৯-৮১-০, রমেশ ১২-০-৪১-০, ধনাঞ্জয়া ৪-০-১৫-০, করুনারত্নে ৪-১-৮-০)।