রমজান মাসে দান-সদকার ফজিলত
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার রাত ১০:৩৬, ২০ এপ্রিল, ২০২২
সংযম, আত্মশুদ্ধি এবং ত্যাগের এই মাসে রহমত (আল্লাহর অনুগ্রহ), মাগফিরাত (ক্ষমা) ও নাজাত (দোজখের আগুন থেকে মুক্তি) লাভের আশায় রমজান মাসে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার, পানাহার ও সকল পাপ কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখেন রোজাদাররা।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র এই মাসটি সবাইকে বদান্যতা, উদারতা, মহত্ব ও দানশীলতার শিক্ষা দেয়। রমজান মাসে দান ও সদকা করলে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি সওয়াব অর্জন করা যায়।
সুরা তওবার ১০৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা নিয়ে তাদেরকে পাক-পবিত্র করুন, তাদের এগিয়ে (নেকির পথে) দিন এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া করুন।”
রমজান মাসে দান ও সদকার গুরুত্ব ঢাকা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
৭০ গুণ বেশি সওয়াব
রমজান মাসে প্রতিটি ভালো কাজের নেকি ৭০ গুণ বৃদ্ধি হবে। রমজান মাসে নফল আমলও ফরজের মর্যাদা পাবে। তাই এ মাসে বেশি বেশি দান-সদকা দেওয়ার পরামর্শের দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
আল্লাহতায়ালা স্বয়ং পুরস্কৃত করবেন
সুরা বাকারার ২৬১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন, “যারা স্বীয় ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা হলো একটি শস্য বীজ; তা হতে উৎপন্ন হলো সাতটি শীষ। প্রত্যেক শীষে (উৎপন্ন হলো) শত শস্য এবং আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছে করেন, বর্ধিত করে দেন। বস্তুত আল্লাহ হচ্ছেন বিপুল দাতা, মহাজ্ঞানী।”
সুনানে আবি দাউদ থেকে জানা যায়, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো বস্ত্রহীনকে কাপড় পরাবে, আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতে সবুজ রেশমি কাপড় পরিধান করাবেন। যে ব্যক্তি কোনো ক্ষুধার্তকে আহার করাবে, আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। যে ব্যক্তি কোনো তৃষ্ণার্তকে পানি পান করাবে, আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের পবিত্র শরাব পান করাবেন।”
জায়েদ ইবনে খালেদ আল জুহানি (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার (রোজাদারের) অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে; তবে রোজাদারের প্রতিদান থেকে বিন্দুমাত্রও হ্রাস করা হবে না।”
তাই রমজান মাসে সাধ্যানুযায়ী দান করতে হবে। কোনো পরিবারের বা গরিব-মিসকিনের পুরো মাসের ইফতার ও সেহরির দায়িত্ব নেওয়া, ঈদের নতুন পোশাক কিনে দেওয়ার মাধ্যমেও সওয়াব অর্জন করা সম্ভব।
গোপনে দান করা
দান এমনভাবে করা উচিত যেন ডান হাত দিয়ে দান করলে বাম হাতও জানতে না পারে। বুখারি শরিফ থেকে জানা যায়, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যারা গোপনে দান করবেন, মহান আল্লাহ কঠিন কেয়ামতের দিন তাদের আরশের ছায়াতলে স্থান দেবেন।” তাই রমজানে গোপনে দান করা আল্লাহর সুনজরে পড়ার সর্বোত্তম উপায়।