মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত সাবেক ফুটবলার নিধু ঘোষ;সাহায্যে এগিয়ে আসছেন না কেউ
এইচএম দিদার,দাউদকান্দি,কুমিল্লা রবিবার সন্ধ্যা ০৬:৪৮, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
আমার বাসায় আসা-যাওয়ার পথে দাউদকান্দি উপজেলার সাহাপাড়া গ্রামের মাঠ কাঁপানো ফুটবলার নিধু ঘোষের সাথে দেখা হতো প্রায়। অনেকদিন পর গত সপ্তাহে ওনার সাথে দেখা হলে ওনার স্বাস্থ্যগত অবস্থা দেখে নিজেই ভেঙে পড়ি।
কী সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন! ফিটনেস বলতে যা বুঝায় সবই ছিলো তার মধ্যে। অথচ মাস দুয়েকের ব্যবধানে জীর্ণ-শীর্ণ কায়।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন!
নিধু ঘোষ দা-কে দেখে বিজয় দাসের হৃদয়স্পর্শী কালজয়ী গানটা মনে পড়লো-“এই পৃথিবী যেমনি আছে তেমনি ঠিক রবে,সুন্দর এই পৃথিবী একদিন ছেড়ে যেতে হবে।”
আজ রোববার আকস্মিক নিধু ঘোষের কথা মনে পড়লো। তাই তার বাসায় ছুটে যাই তাকে দেখার জন্য।
গিয়ে দেখি মেঝেতে বিছানায় শুয়ে আছেন।আমাকে দেখে ইশারায় কথা বলার চেষ্টা করছেন, কিন্তু পারছেন না কথা বলতে। চোখ থেকে অঝরে ঝরছে চলচল জল। তার কান্নার কাছে হারতে মানতে হলো আমাকেও। আমার ততোক্ষণে চোখের জল গড়িয়ে বুকে আছড়ে পড়লো!
খোঁজ নিয়ে জানা গেলো- এক সময়ের সতীর্থরা কেউ তাকে দেখতেও আসছেন না। জীবন বুঝি এমনই হয়; নিয়তির কাছে হার মেনে এই ধুলির ধরাকে এভাবেই হয়তো করুণ আর্তনাদ আর অভিমান বুকে নিয়ে তিনি বিদায় নিবেন।
কথা হয় তার সহধর্মিণীর সাথে, তিনি জানালেন- তিনি প্রায় ৪০ বছর মাঠে ময়দানে দাপুটের সাথে খেলেছেন। শারীরিক প্রচুর কসরত করতেন। ফুটবল ছিলো তার ধ্যানধারনা।
তার কাছে ফুটবল ছিলো নেশা। সুস্থ থাকতে কর্মের পাশাপাশি তিনি প্রতিদিন বালুর মাঠে প্র্যাকটিস করতেন।
তিনি আরও জানালেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দাউদকান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে কুচকাওয়াজ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়,পরে আমরা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার জানালেন তিনি স্ট্রোক করেছেন। ক্যানসার ও স্ট্রোকের চিকিৎসা চলছে। আমাদের সাধ্য যতোটুকু ছিলো তা দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। এখন আর পারছি না। নিধুর চিকিৎসার জন্য আপাদত প্রায় ৩ লাখ টাকার প্রয়োজন যা আমরা যোগান দিতে পারছি না।
তাই আমি ওর সতীর্থ ও বন্ধু বান্ধবসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ করছি-নিধুকে সহযোগিতা করার জন।
সাবেক খেলোয়াড় শামীম মোল্লা জানান, সাবেক কৃতী ফুটবলার নিধু ঘোষের চিকিৎসা করার জন্য সহযোগিতা করতে সকল সাবেক খেলোয়াড়দের এগিয়ে আসা উচিত। সকলের সাথে আমিও আমার সাধ্যমতো সহযোগিতা করতে চেষ্টা করবো।
কথা হয় ৫ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর ও সাবেক খেলোয়াড়দের সংগঠন ” সোনালী অতীত” ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার বিল্লাল হোসেন সুমন এর সাথে। তিনি জানান- নিধু ঘোষ একজন দুর্দান্ত ফুটবলার ছিলেন, ফুটবলে তার সোনালী অতীত রয়েছে। আমি এ বিষয়টি নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে সোনালী অতীত সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা করে ভালো কিছু করার জন্য চেষ্টা করবো।
সর্বপোরি- এই কৃতী ফুটবলারকে সহযোগিতা করার জন্য জনপ্রতিনিধি ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান করছি।