পুলিশ ও র্যাব প্রধানসহ ৬ কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
ডেক্স রিপোর্ট শনিবার রাত ০২:১৯, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার লঙ্ঘনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সরকারের নির্বাহী আদেশ ১৩৮১৮-এর আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ আদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত ব্যক্তির সম্পদ বাজেয়াপ্তের কথা উল্লেখ রয়েছে।
এর মধ্যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার সংগঠন হিসেবে র্যাব এবং অভিযুক্ত অন্য পাঁচ কর্মকর্তাকে বাংলাদেশে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত করেছে। এই পাঁচ কর্মকর্তার প্রত্যেকেই বাহিনীটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
বেনজীর এবং আবদুল্লাহ আল মামুন ছাড়া বাকি চারজন হলেন- অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তাফা সারওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খান।
তাদের মধ্যে আইজিপি বেনজীর আহমেদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে দেশটি। বাকিদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পদ থাকলে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দপ্তর প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারঘোষিত যুদ্ধে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। যা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, মৌলিক স্বাধীনতা এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য হুমকিস্বরূপ বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে।
র্যাব একটি যৌথ টাস্কফোর্স যা ২০০৪ সালে গঠিত হয়। এই বাহিনীটির সদস্যরা আসেন পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিজিবি থেকে।
এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে- অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তথ্য অনুসন্ধান এবং সরকার নির্দেশিত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা।
একাধিক বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) অভিযোগ, র্যাবসহ বাংলাদেশের একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০০ জন ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে জড়িত। ২০১৮ সাল পর্যন্ত এসব বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৬০০ জন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা এসব হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়।
২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল র্যাব মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৪ এপ্রিল, ২০২০ পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন বেনজীর আহমেদ।
খান মোহাম্মদ আজাদ ২০২১ সালের ১৬ মার্চ র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) হিসেবে দায়িত্ব পান। তার আগে এই পদে ছিলেন তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার।
২০১৮ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৭ জুন পর্যন্ত বাহিনীটির অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (অপারেশনস) দায়িত্বে ছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। তার আগে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন আনোয়ার লতিফ খান।