নামাজের জন্য পৃথক জায়গা কেন সংরক্ষণ করা হবে না এই মর্মে হাইকোর্টে রুল জারি
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ১০:৫১, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
দেশের শপিংমল, এয়ারপোর্ট, বাস টার্মিনাল, নৌ-বন্দর ও রেলওয়ে স্টেশনে নামাজের জন্য কেন পৃথক জায়গা সংরক্ষণ করা হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক রিটের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি মামনুন রহমান এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ইলিয়াস আলী মন্ডল। শুনানিতে তিনি বলেন, নামাজের জন্য জায়গা থাকা মুসলমানদের অধিকার। বিশ্বের পশ্চিমাদেশেও শপিং মল, এয়ারপোর্ট, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক প্লেসে ‘প্রার্থনা ঘর’ রাখা হয়। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয় পৃথক নামাজের জায়গা।
তিনি বলেন, শুধু মুসলমানদের জন্য নয়। সমস্ত ধর্মাবলম্বীদের জন্যই পৃথক প্রার্থনা-ঘর থাকে। এতে তারা তাদের ভগবানের প্রার্থনা করবেন, কেউ তাদের ঈশ্বরের প্রার্থনা করবেন। বিশেষত আমরা যারা নামাজ আদায় করি, সিজদা করি। সবাই যেন ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে পারি এ জন্য পৃথক জায়গা সংরক্ষণ করা জরুরি।
বাংলাদেশ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশ। এখানকার ৯০ ভাগেরও বেশি মানুষ মুসলমান। অথচ এদেশের মার্কেট, শপিংমল, এয়ারপোর্ট, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনালগুলোতে নামাজের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। মুসল্লিদের জন্য রাখা হয় না পৃথক প্রশ্রাব-পায়খানা এবং ওযুখানা। এতে দূর-দূরান্তের যাত্রী এবং পথচারীদের ওয়াক্ত অনুযায়ী নামাজ আদায় কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
শুনানিতে বলা হয়, ধর্মকর্ম পালন সংবিধানে দেয়া নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অধিকার ‘মৌলিক অধিকার’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, (১) (ক) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে। এ প্রেক্ষাপটে একজন মুসলমানের অধিকার রয়েছে পাবলিক প্লেসগুলোতে ওয়াক্ত অনুযায়ী নামাজ আদায় করার।
অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আলী মন্ডল বলেন, বাংলাদেশে অনেক স্থানে পাবলিক প্লেসে নামাজের স্থান সংরক্ষিত নয়। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন। রিটে সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আজাদ। মন্ত্রী পরিষদ সচিব, ধর্ম সচিব, নৌ-পরিবহন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিবসহ ২১ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। পরবর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।