দাউদকান্দিতে পুলিশের চেকপোস্ট বন্ধ থাকায় অবাধে ঢুকছে মাদক
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার সোমবার সন্ধ্যা ০৬:১০, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪
ঢাকা-চট্রগ্রামের প্রবেশদ্বার বলা হয় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের টোলপ্লাজাকে। এই রুট দিয়ে ঢাকা-চট্রগ্রামগামী মানুষের যাতায়াত বেশি।
ঢাকা প্রবেশের দ্বার হওয়াতে অপরাধ তৎপরতারোধাসহ, অবাধে মাদক কারবারি ও চোরাকারবারিরা রাজধানীসহ আশপাশের জেলায় ঢুকতে পাকড়াও হতো টোলপ্লাজায় পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট থাকার কারণে।
মূলত এই টোলপ্লাজা অংশে ছিলো কুমিল্লা জেলা পুলিশের নির্দেশে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের চেকপোস্ট। প্রায় প্রতিদিনের রুটিনে বড় চালানের মাদকসহ মাদককারবারি গ্রেফতারের খবর আসত মিডিয়া পাড়ায়। এই স্থাুনে গ্রেফতারের নজির রয়েছে স্বর্ণ চোরাচালানকারবারিসহ বড় চালানের মাদককারবারিসহ হুন্ডি ব্যবসায়ীরা।
তবে সেই দিন এখন অতীত। সরেজমিনে এই স্পটে গিয়ে দেখা যায়, এখানে পুলিশের কোনো চেকপোস্ট নেই। কী কারণে চেকপোস্ট বন্ধ তা জানার চেষ্টা করে অবশেষে সেই তথ্যও পাওয়া যায়।
জানা যায়, তীব্র ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে ক্ষমতা দেশ ছেড়ে পালায় স্বৈরাচারী তকমা পাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে পুলিশের দায়িত্বসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ঘটনা ঘটছে। এর ফলে সারাদেশেজুড়ে পুলিশের দায়িত্বহীন থাকার কারণে ঘটে ছোট-বড় অনেক অপরাধপ্রবণ ঘটনা। সারা দেশে প্রায় সপ্তাহখানেক বন্ধ থাকে পুলিশের ডিউটি।
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে কাজের গতি ফিরে পুলিশের। কিন্তু এই ফাঁকে পুলিশের দায়িত্বহীন থাকায় মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারিরা অবাধে নিজেদের রাজ্য কায়েম করে।
দেশের লাইফলাইনখ্যাত ঢাকা- চট্টগ্রামের রুটের এই টোলপ্লাজা অংশে চেকপোস্ট বন্ধ থাকার কারণে ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় মাদকসহ বিভিন্ন অবৈধ জিনিসপত্র সরবরাহ করে মাদককারবারী ও চোরাকারবারিরা।
উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, ” মাদক নির্মূলে পুলিশের দায়িত্ব অপরিসীম। তবে চেকপোস্ট বন্ধ থাকায় রাজধানীসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলায় ব্যাপকহারে মাদক ঢুকছে। এখন হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। এই মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করতে হলে আমি উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করছি যেন দ্রুত দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় চেকপোস্ট চালু করা হয়।”
স্থানীয় এক বাসিন্দা ও সমাজকর্মী তৌফিক রুবেল জানান,” দেশের অনেক বড় মাদককারবারিরা এই সড়ক দিয়ে মাদক সরবরাহ করে থাকে। এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে চেকপোস্ট বন্ধ থাকা মানে খুব সহজে মাদকাসক্তদের হাতে হাতে মাদক পৌঁছে যাওয়া তাই আমি জেলা পুলিশ সুপার ও মডেল থানা পুলিশের কাছে অনুরোধ করছি খুব দ্রুত টোলপ্লাজার অংশে পুলিশের চেকপোস্ট চালু করে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করুন। ”
মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুনায়েত চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,” এই থানায় জনবল সংকট ও পুলিশের টহল গাড়ি না থাকার কারণে পুলিশ চেকপোস্টের ডিউটি করতে পারছে না। তবে বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে জানাব। উর্ধ্বতন কর্তপক্ষ যেভাবে নির্দেশনা দিবে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশ সেভাবেই কাজ করবে। পাশাপাশি আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে কাজ করবো। যেই মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাকে ছাড়া দেওয়া হবে না। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলমান। এই থানায় আমি নতুন যোগদান করেছি, আমি যোগদানের পর থেকে মান্যবর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে যৌথবাহিনীর অভিযানে দাগি একাধিক মাদককারীসহ দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছি।”
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ টোলপ্লাজায় কেন চেকপোস্ট বন্ধ এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাউদকান্দি-চান্দিনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) ফয়সাল তানভীর জানান,”এটি চেকপোস্টের বিষয়ে আমি উর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে সাথে আলাপ আলোচনা করছি খুব দ্রুতই চেকপোস্ট চালু হবে বলে মনে করি।”