জুনের শেষেই চালু হবে পদ্মা সেতু
নিজস্ব প্রতিনিধি রবিবার রাত ০২:০২, ১৫ মে, ২০২২
আগামী মাসের শেষ দিকে সরকার পদ্মা সেতু চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন। বুধবার বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১১১তম বোর্ড সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
এ সময় পদ্মা সেতু চালু করতে প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী মাসের শেষ দিকে ইনশাল্লাহ আমরা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা সামারি (সারসংক্ষেপ) পাঠাচ্ছি। তিনি যেদিন সময় দেবেন, ঠিক সেদিনই আমরা বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।’
এর আগে গত মাসে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চালুর কথা জানিয়েছিলেন। এমন পরিপ্রেক্ষিতে জুনে না কি বছরের শেষে সেতু চালু হবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়। বিষয়টি স্পষ্ট করার কথা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মন্ত্রী। আমি জেনে শুনেই বলছি জুনেই পদ্মা সেতু চালু হবে। পদ্মা সেতু সম্পর্কে ধোঁয়াশার কোনো কারণ নেই। আমরা শেষ দিকে আছি। সামান্য কিছু কাজ বাকি। তা মে মাসের মধ্যেই আমরা শেষ করব।
তবে জুনে পদ্মা সেতু চালু হলেও উদ্বোধনের দিন থেকে ট্রেন চলাচল সম্ভব নয় বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আগামী জুলাই থেকে সেতুতে রেলের কাজ শুরু হবে।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২৩ জুন। ওই দিন পদ্মা সেতু চালুর বিষয়টি আলোচনা আছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ২৩ জুন সেতু চালু করা হবে না।
পদ্মা সেতুর টোল হার চূড়ান্ত হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, টোল হারের সামারি আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। তিনি যেটা অনুমোদন করবেন, সেটাই চূড়ান্ত হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৯২ শতাংশ। মূল সেতুর পিচঢালাই কাজের অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। প্রকল্পের কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৯৩. ৫ শতাংশ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৈঠকে জানিয়েছেন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সময় চেয়েছেন। এ জন্য দ্রুত দেখা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের একটি তারিখ নেওয়া হবে। এরপর সেই অনুযায়ী দিন-তারিখ লিখে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। বুধবারের বৈঠকে আলোচনা না হলেও সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালুর বিষয়ে একটা আলোচনা কর্মকর্তাদের মধ্যে আছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের যে অবস্থা হয়েছে, বর্তমান সরকারের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের অবস্থা হবে আরও ভয়াবহ। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেবদেরই এই অবস্থা হবে। তারা আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ। এসব ব্যর্থ নেতাদেরই পদত্যাগ করা উচিত। তাদের বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দেওয়া দরকার।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেবকে বলেন এত ব্যর্থতা নিয়ে আপনি এখনো আছেন? বঙ্গোপসাগরে গিয়ে ঝাঁপ দিচ্ছেন না কেন? শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার বাস্তবতা এক না। বিএনপি নিজেদের অতীতের ব্যর্থতা আড়াল করতে নানান ইস্যুতে আশ্রয় খুঁজছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কখনো আরব বসন্তের স্বপ্ন দেখছে। আবার কখনো পরাশ্রয়ী আন্দোলনে ভর করে ক্ষমতায় যাওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখে। তারা হেফাজতে ভর করেছিল। কোটা বিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও স্বপ্ন দেখেছিল। ভারতের সরকার পরিবর্তনের পর তো ফুল আর মিষ্টি নিয়ে বন্ধের দিনে দূতাবাসের দরজায় গিয়ে অপেক্ষায় ছিল। সক্ষমতাহীন, মেরুদণ্ডহীন একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক দলের সাময়িক আত্মতুষ্টিতে ভোগা ছাড়া আর কিছুই নেই।