চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মায় সর্বহারা মানুষের পাশে জারা মাহবুব; সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও ত্রাণ বিতরণ
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোমবার রাত ০১:০৯, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ভাঙনের কবলে পড়ে গত কয়েকদিন থেকে সর্বনাশা পদ্মা নদীতে তলিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের কয়েকশ বসতবাড়ি ও হাজার হাজার বিঘা ফসলী জমি। এছাড়াও ভারত থেকে বয়ে আসা অতিরিক্ত পানিতে বন্যার কবলে পড়েছে নদী পাড়ের বাসিন্দারা। অসহায় এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জারা জাবীন মাহবুব। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী এই দুই ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৪শত পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি।
সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “হেল্প চাঁপাই” এর স্বেচ্ছাসেবকরা ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ভাঙন ও বন্যা কবলিত মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। এ সময় প্রত্যেক পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, আলু, খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেয়া হয়েছে। এর আগে পদ্মা নদী ভাঙনের কারনে পাঁকা ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার নিশিপাড়া চরে আশ্রয় নিলে তাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেন জারা জাবীন মাহবুব। এ সময় তাদের জন্য ২২টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরও একই এলাকায় নদী ভাঙন ও বন্যা কবলিত মানুষের খাদ্য সহায়তা ও নগদ অর্থ প্রদান করেন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবীমূলক সংগঠন “হেল্প চাঁপাই” এর সভাপতি জারা জাবীন মাহবুব। এছাড়াও চলতি বছরের ১১ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার গাছের চারা রোপন করে এই সংগঠন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন ফলদ, বনজ ও ভেষজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জারা জাবীন মাহবুব বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় চলতি বছরেও পদ্মা নদীতে শিবগঞ্জ উপজেলার অনেক এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। সম্প্রতি ভাঙনের তীব্রতা ও ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায়। প্রমত্তা পদ্মার স্রোতে মুহূর্তেই নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রতি বছরই চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে পদ্মা। ভাঙনে বিশাল বিশাল জায়গা মুহূর্তেই যেন গিলে খাচ্ছে সর্বনাশা পদ্মা। নিঃস্ব মানুষের আহাজারিতে এখন ভারি হয়ে উঠেছে পদ্মার পাড়।
তিনি আরও বলেন, ভাঙন কবলিত মানুষের দুর্দশার কোনো সীমা নেই। সকাল বেলার আমির; বিকেলেই হয়ে যাচ্ছে ফকির। এই অবস্থা কিছুতেই কাঙ্খিত হতে পারে না। ভাঙনের ফলে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে সবাইকে। তাৎক্ষণিক সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করতে হবে। ভাঙন কবলিত এলাকায় সাহায্যের জন্য সমাজের বিত্তবান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রতি আহবান জানান তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কাজ করছে “হেল্প চাঁপাই”। গত বছরের জুন মাস থেকে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত “হেল্প চাঁপাই”-এর পক্ষ থেকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের করোনা ইউনিটে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে প্রায় ৭ হাজার মাস্ক বিতরণ, শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১৯ হাজার জন মানুষকে প্রভাবিত করে ৪টি ইউনিয়ন জুড়ে ৩ মাসব্যাপী ক্যাম্পের মাধ্যমে আইভারমেকটিন বিতরণ, পাঁকা ইউনিয়নে বন্যা দুর্গত ৩৫০টি পরিবারকে ৭ দিনের খাবার বিতরন করা হয়েছে।
কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়িতে গিয়ে প্রায় ১২০০ শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, হুইল চেয়ার প্রদান, সুবিধা বঞ্চিত ও ক্রয় ক্ষমতাহীন পরিবারদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে “হেল্প চাঁপাই”।