গত ১৬ বৎসরেও এত বৃষ্টিপাত হয়নি: উপজেলা কৃষি অফিসার
একরামুল ইসলাম,পীরগাছা,রংপুর শনিবার বিকেল ০৫:০৫, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
উজান থেকে নেমে আসা পানি ও দফায় দফায় ভারী বর্ষণের ফলে ফের তলিয়ে গেছে রংপুরের পীরগাছার বিভিন্ন এলাকা। সেই সাথে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেতসহ ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ। অতিবৃষ্টির কারণে কাজে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন শ্রেণির মানুষেরা। পানিবন্দী পরিবারের মানুষজনের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গবাদি পশুর গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সেইসাথে চরম বিপাকে পড়েছে বন্যা দুর্গত এলাকার পানিবন্দি মানুষজন।
কয়েকদিন থেকে দফায় দফায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ আবারও প্লাবিত হয়েছে। অনেকের বাড়িতে ফের পানি উঠে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলার উঁচু এলাকাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ রবিশস্যের ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খামারিরা ও কৃষকরা কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। এদিকে ভারী বর্ষণে বিভিন্ন উঁচু নিচু এলাকা পানিতে ভরে গেছে। ফলে কিছু জেলে এর সুযোগও নিচ্ছে, কেউ শখে কেউ পেশায় বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাছ শিকার করছে প্লাবিত এলাকাগুলোতে। একদিকে খামারিদের কাঁন্না, অন্যদিকে মাছ শিকারিদের মুখে হাসি। যেন কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। মাছ শিকারিরা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাছ ধরছে। যেমন-কারেন্ট জাল, ক্যাটা, হাত জাল ও পাচা প্রভূতি উপকরণ দিয়ে তারা মাছ ধরে থাকে।
উপজেলার মাছুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মমিন মিয়া বলেন, কয়েকদিন থেকে ভারী বর্ষণের ফলে আবাদি ফসল তলিয়ে গেছে। এতে আমার কয়েক বিঘা জমির ফসল ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
আরেকজন কৃষক ফজল আলী বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে আমার রোপনকৃত ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। যেসব জমি উঁচু এলাকায় আছে, সেইসব আবাদও তলিয়ে গেছে। এবার আমার আবাদি ফসলের কোনো আশা-ভরসা নেই।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শামিমুর রহমান বলেন, এবারে উপজেলায় ২০ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন করা হয়েছে। তন্মধ্যে টানা বর্ষণের ফলে ১৬০ হেক্টর আবাদি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছি। আজকালের মধ্যে পানি টানতে শুরু করলে ফসলি জমির তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে আমরা মনে করি। তবে গত ১৬ বৎসরে এত বৃষ্টিপাত হয়নি।