ঢাকা (রাত ৯:২৯) রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার পরিবর্তে ব্যাংকের আগ্রহ বড়দের দিকে

অর্থনীতি ২১৬৫ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock বুধবার বিকেল ০৫:৩৬, ২৪ আগস্ট, ২০২২

করোনাভাইরাস মহামারির ধকল কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ সরকার দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। এই প্যাকেজের সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। যা পুরো প্যাকেজের ৬৭.৫২%।

এই প্যাকেজের দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল জামানতবিহীন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধা দেওয়া ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমে (সিজিএস)। তবে এই বরাদ্দের পুরোটা বিতরণ করা হয়নি। বরাদ্দের মাত্র ৬% বিতরণ করা হয়েছে যার পরিমাণ ১২১ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প। তা সত্বেও তারা কম ঋণ পাচ্ছে। তাদের ব্যাংকে নানা ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ব্যাংকগুলো তাদের ব্যাপারে এক ধরনের অনীহা প্রকাশ করছে; অন্যদিকে ব্যাংকগুলো বড় ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দিতে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

এ সংক্রান্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের অধীনে, বড় মাপের ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাক-টু-ব্যাক লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) এর অধীনে কাঁচামাল আমদানি বাড়াতে ২% সুদে ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এছাড়া গত অর্থবছরে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প সেবা খাতে ৩৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে এক হাজার ৩১১টি প্রতিষ্ঠানকে বিরতরণ করা হয় ১২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা।

পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্যাকেজ থেকে ৭০টি প্রতিষ্ঠান ৭২৫ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৪.৫১%।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর কিছুটা আস্থার প্রয়োজন। ব্যাংকগুলোতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নানা রকমের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় ফলে তারা অনেক কম ঋণ পান। সাধারণত ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয় কারণ ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে নারাজ।

তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বদা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দিয়ে থাকি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। এটি অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সিপিডির এই ফেলো বলেন, কিছু ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ ও নগদ প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের ভিত্তিতে ঋণ দিতে চাচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করা উচিত। চলতি অর্থবছরে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাতের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা উচিত। দরকারে তাদের তিন মাস পর পর এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্যবেক্ষণ করবেন।

অন্যদিকে, দুই মাস হাতে রেখেই কৃষি শিল্পের জন্য ৩ হাজার টাকার দ্বিতীয় পর্যায়ের ঋণের ৯৪% বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই প্যাকেজ থেকে এক লাখ ৮৮ হাজার ৯৬৬ জন কৃষককেদুই হাজার ৮৩০ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় সরকার এ পর্যন্ত এক লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার মোট ২৮টি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ১০টি প্রণোদনা প্যাকেজের সঙ্গে জড়িত, যার পরিমাণ এক লাখ ৬৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT