ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডির কার্ডধারীদের মধ্যে দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিতরণের অভিযোগ
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) রবিবার রাত ১০:৪৮, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদের বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের ভিজিডির কার্ডধারীদের মধ্যে দুর্গন্ধযুক্ত ও খাবার অনুপযোগী চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার ওই ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বরাদ্দকৃত চাল বিতরণ করা হয়েছে। সময়মতো চাল বিতরণ না করায় ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিতরণ করার কারণে কার্ডধারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে ২৭৬জন ভিজিডি কার্ডধারী রয়েছে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ওই ইউনিয়নের প্রত্যেক কার্ডধারীদের বিপরীতে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের জন্য আট টন ২৮০কেজি করে দুই মাসের সর্বমোট ১৬টন ৫৬০কেজি চাল বরাদ্দ পাওয়া যায়। গত ১৯ডিসেম্বর এই বরাদ্দকৃত চাল উপজেলার মধ্যনগর খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেন বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ। ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিডির কার্ডধারীদের বিপরীতে আসা এই চাল উত্তোলন করে তা ওই ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে দেন। চাল উত্তোলনের এক মাস ৯দিন পর গত শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ভিজিডির কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ শুরু করা হয়। কিন্তু চাল বিতরণ করলে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কক্ষে দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় চাল পড়ে থাকায় চালগুলো দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায়। এ অবস্থায় ভিজিডির বরাদ্দকৃত চাল নিতে গিয়ে সুবিধাভোগীরা অনেকেই ক্ষোভ ও হতাশ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভিজিডি কার্ডধারী জানান, আমাদের প্রত্যেককে দুই মাসের ভিজিডির চাল বাবদ ৬০কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক চালই দুর্গন্ধযুক্ত ও খাওয়ার অনুপযোগী।
বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সনজিত সরকার ও ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্গন্ধযুক্ত ও ভেজা চাল পেয়ে বেশ কয়েকজন কার্ডধারী আমাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ সাহেবের গাফিলতির কারণে এই চাল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কক্ষে পড়ে থাকতে থাকার কারণে এই অবস্থা হয়েছে।
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ বলেন, চাল বিতরণে আমার কোনো গাফিলতি ছিল না। ইউপি সদস্যরা অসহযোগিতা করার কারণেই চাল বিতরণে দেরি হয়েছে। এসবের জন্য ইউপি সদস্যরাই দায়ি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। কারও গাফিলরি কারণে ভিজিডি কার্ডধারীরা দুর্গন্ধযুক্ত চাল পেয়ে থাকলে তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।