স্ত্রীর গায়ে আগুন দিল স্বামী, অর্থ এবং আইনি সহয়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ালো ব্রাক
মো. শাকিল হোসেন শওকত, নাগরপুর, টাঙ্গাইল মঙ্গলবার রাত ০৮:২৭, ৭ জুলাই, ২০২০
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের শাহজানী গ্রামের আব্দুল হালিম এর মেয়ে সুমি আক্তার কে ব্রাক সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচীর মাধ্যমে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং ব্রাক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচীর পক্ষ থেকে আইন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
গত ২ জুলাই দুপুরে উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে নগদ অনুদান তার বাবা আব্দুল হালিম এর হাতে তুলে দেয় ব্রাক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নাগরপুর উপজেলার সমাজ সেবা অফিসার সৌরভ তালুকদার, ব্রাক টাঙ্গাইল জেলার সামাজিক কর্মসূচীর ব্যবস্থাপক মজিবুর প্রামাণিক, নাগরপুর উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক হিসাব ব্যবস্থাপক অতুল চন্দ্র সাহা, ফিল্ড অর্গানাইজার মোর্শেদা তাহারামা, সালমা আক্তার, সুমির বাবা আব্দুল হালিম, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
এলাকাবাসী ও ব্রাক কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন রাত অনুমানিক ১১টা এর সময় সুমিকে বাবার বাড়ি থেকে শশুর বাড়তি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, শশুর বাড়ির অদূরেই কাঠাল গাছের নীচে এসে সুমির শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় স্বামী আব্দুল্লা আল মামুন।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার চর জাজুরিয়া গ্রামের মো. শাজাহান এর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (সাবেক নৌবাহিনীর সদস্য) ঘরে স্ত্রী থাকতেও অবিবাহিত পরিচয়ে সুমির সাথে প্রেম। পরে পরোকিয়া প্রেমে এলাকাবাসীর কাছে ধরা খেয়ে বিয়ে করেছিল সুমিকে। সুমি গর্ভবতী হলে তাকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয় মামুন। তখন থেকে ভরনপোষণ নাকরার সুমির। এতে সুমি খোরপোষের মামলা করলে, নৌবাহিনীর চাকুরী চলে যায় মামুনের। পার হয় দীর্ঘ সময়, এর মধ্যে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয় সুমিকে। বলে, তোর জন্য তো আমি চাকুরী হারিয়েছি, এখন চলবো কিভাবে। তাই ব্যবসার জন্য টাকা লাগবে। তোর বাবার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে আয়, আমি ব্যবসা করি।
পরে, গত ২৬ তারিখে মামুন শশুর বাড়ি আসার কয়েক ঘন্টা পর মামুন বলে, আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ, তাই তাকে শেষ দেখা দেখতে যাবো। তাই সুমির বাবাকে বলে স্ত্রীকে নিয়ে রাতেই রওনা দেয়। কিছু দূর যেতেই মামুন আগে থেকে লুকিয়ে রাখা কেরোসিনের বোতল বের করে সুমির শরীরে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সুমির চিৎকারে এলাকাবাসী এসে তাকে রাস্তার পাশের খাল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এতে, তার শরীরে ৬০℅ পুরে গিয়েছে, মৃত্যু যন্ত্রণায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সুমি শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ব্রাক মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচীর পক্ষ থেকে তাকে আইন সহায়তা দেয়া হয়েছে। এতে নাগরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামুনের পিতা ও বড় ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু মামুন এখনো পলাতক রয়েছে।
অসহায় নির্যাতিতাকে সাহায্য করতে তার চাচা মো. সোহেল ০১৭২৭২৬১০২৬ এর সাথে যোগাযোগ করার আহ্বান করেছে তার পরিবার।