সাহেদকে গ্রেফতারে কঠোর অবস্থানে মৌলভীবাজারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০৮:২৩, ১৪ জুলাই, ২০২০
করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া সনদ দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে।
পরদিন উত্তরা শাখা সিলগালা করে দেয় র্যাব। একই দিন রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর এবং উত্তরা দুটি শাখারই কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ইস্যু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর
এরপর মঙ্গলবার (৭ জুলাই) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় দণ্ডবিধি ৪০৬/৪১৭/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১/২৬৯ ধারায় প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। আটজনকে আটক করা হয়েছে। সাহেদসহ ৯ জন পলাতক।
এরই মধ্যে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে, দেশের উত্তর-পূর্বের শান্তিপূর্ণ জনপদ সিলেটের জামাই জালিয়াত সাহেদ। সিলেটে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন তিনি। তাই তার সকল ক্রাইম ঢাকাকেন্দ্রিক হলেও ‘সিলেট কানেকশনকে’ টার্গেট করে প্রশাসনের স্পটলাইট এখন সিলেটেই। সাহেদ করিম সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত যেতে পারে- এমন সন্দেহে বর্ডার এলাকায় গতকাল সোমবার (১৩ জুলাই) বিকেলে আকস্মিকভাবে পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। কারণ- সাহেদের মুঠোফোন ট্র্যাক করে জানা যায়- তিনি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছেন।
সোমবার বিকেলে বিষয়টি জানার পর থেকেই শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী সড়কে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দাঁড়িয়ে যানবাহন তল্লাশি শুরু করেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলেও নজরদারি রাখছেন পুলিশ।
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, মো. সাহেদ কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্ত পথে ভারতের ত্রিপুরা যেতে পারেন। কারণ- সাহেদের মুঠোফোন ট্র্যাক করে দেখা গেছে- তিনি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছেন। তাই সোমবার বিকাল থেকে শমশেরনগর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
উল্লেখ্য, বহু অপকর্মের মূল হোতা মো. সাহেদ করিম দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন সিলেটে। তার স্ত্রী সাদিয়া আরাবি রিম্মির পৈত্রিক বাড়ি সিলেট নগরের ২৭ নং ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ও সিলেট মেট্রোপলিটনের মোগলাবাজার থানাধীন পাঠানপাড়ায়।
সাহেদ করিমের এই ‘সিলেট কানেকশন’ খুঁজে পাওয়ায় কয়েকদিন আগে থেকেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। আত্মগোপনে থাকা সাহেদ পালিয়ে আসতে পারেন সিলেটে- এমন সন্দেহে তার অবস্থান চিহ্নিত করতে প্রযুক্তির সহায়তায় জোর তৎপরতা চালাচ্ছে গোয়েন্দা বিভাগ। তাতে সহায়তা করছে সিলেটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বিপিএম বলেন, আমাদের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। সাহেদ সিলেটে ঢুকলেই আমরা খবর পাবো এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবো।