সাঘাটায় কলেজে ছাত্রকে থানায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতন
আসাদ খন্দকার,সাঘাটা,গাইবান্ধা শুক্রবার রাত ০৯:৪৩, ৬ আগস্ট, ২০২১
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় আজিজুল হক কলেজের ১ম বর্ষের হিজবুল্যাহ ফকির নামে এক ছাত্রকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্র বর্তমানে জামিন নিয়ে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে গত ০২ আগষ্ট (সোমবার)। এ ঘটনার বিষয়ে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্র হিজবুল্যাহ ফকির বলেন- আমার জ্যাঠাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম টুকু জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদে সাঘাটা থানায় গত ১৫ জুলাই একটি সাজানো ছিনতাই মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২ আগষ্ট সাঘাটা থানার এসআই তফিজ উদ্দিন আমাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
পরে থানার মধ্যে এসআই তফিজ উদ্দিন আমার চোখ, হাত-পা বেঁধে কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করেন এবং বাদি জাহিদুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে বলে যে- আরো মারতে হবে কিনা। তখন বাদি বলে জীবনটা বেঁচে রেখে যত পারেন তত মারতে পারেন এবং আসামীকে অকথ্য ভাষা সহ নির্যাতনের কথা কাউকে বললে বা প্রকাশ করলে তোকে জীবনের মত শেষ করে ফেলব। দুনিয়ার মুখ আর দেখতে দেব না। আর তোর অভিভাবকদের ফোন করে বল- ৫০/৬০ হাজার টাকা আনতে। টাকা দিলে তোকে থানা থেকে ছেড়ে দিব। নচেৎ কোর্টে চালান করে দিব। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গাইবান্ধা কোর্টে চালান করেন।
গাইবান্ধা কোর্টে জামিনের আবেদন করলে সাথে সাথে বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সাঘাটা আমলি আদালত- গাইবান্ধা অমানবিক নির্যাতনে জখমি হিজবুল্লাহ ফকিরের শরীর পর্যবেক্ষণ করেন এবং আসামী ও উকিলের জেরা শুনে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট দারোগা কর্তৃক মোবাইলে ওসি, সাঘাটা থানাকে কেন বেআইনী ভাবে আসামীকে মারা হলো তা অবহিত করেন। ওই দিনই জামিন নিয়ে অসুস্থ্য ওই ছাত্র হিজবুল্লাহ ফকির পার্শ্ববর্তী সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন।
অমানবিক নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্র আরো বলেন- এ ঘটনার পূর্বে জমি সংক্রান্ত বিবাদে কয়েকটি মামলা সাঘাটা থানায় দায়ের করেন জ্যাঠাত ভাই জাহিদুল ইসলাম। সে ব্যাপারে চেয়ারম্যান সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিচার শালিস করেন। সেখানেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে থানা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত করে হয়রানির শিকার করানো হয়। থানা পুলিশের এমন অমানবিক নির্যাতন দেখে আমার বড় ভাই আব্দুল্লাহ ফকির সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে গত ০৪ আগষ্ট (বুধবার) গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তফিজ উদ্দিননের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ ঘটনায় সাঘাটা থানা অফিসার ইনচার্জ বেলাল হোসেন বলেন- আসামী হিজবুল্যাহকে গ্রেফতার করে ওই দিনই গাইবান্ধা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাকে কোন নির্যাতন করা হয় নি।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন- কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।