ভোলায় গরিবের চাল আত্মসাৎকারী বরখাস্ত চেয়ারম্যান আবারও নৌকার মাঝি
কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা শনিবার রাত ১১:৫৪, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১
ভোলায় গরিবের চাল আত্মসাৎসহ নানা দূর্নীতির কারণে বরখাস্ত হওয়া ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান আবারও আ’লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি এ ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
দূর্নীতির অভিযোগে মিজানুর রহমান তার মেয়াদকালে সাময়িক বরখাস্তও ছিলেন। গত বছরের ২৩ মার্চ ১২ জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মিজানুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন ডিসি। পরে মন্ত্রণালয় থেকে একই বছরের ২৩ এপ্রিল মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বরখাস্তের পর মিজানুর রহমান উচ্চ আদালতে রিট আপিল করলে বিচারক চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ৩ মাসের অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দেন, যা ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল আছে।
ভোলা জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু বলেন, তৃণমূলের নেতাদের ভোট মূল্যায়ন করে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি রেজাউল করিমকে ১ নং রেখে কেন্দ্রে তালিকা পাঠানো হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড মিজানুরকেই আবার মনোনয়ন দিয়েছে। এর কারণ, তালিকায় ১ নং থাকা রেজাউল ২০১১ ও ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন।
১২ ইউপি সদস্যের করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, চেয়ারম্যান হওয়ার পর মিজানুর রহমান ইউনিয়নে আসা বরাদ্দ লোপাট করেন। ইউনিয়নের সরকারি গাছ বিনা দরপত্রে কেটে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া টাকার বিনিময়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা-স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বিতরণ করেছেন। সবশেষ জেলেদের আপদকালীন সময়ে যে চাল দেওয়া হয়েছে, সেই চালের ৪০ মেট্রিক টন আত্মসাধ করেন।
এ বিষয়ে মিজানুর রহমান খান জানান, তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ উঠেছে, তা সব মিথ্যা। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। এ জন্য তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
দূর্নীতির অভিযোগ ওঠা চেয়ারম্যানকে আবারও দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ভোলা জেলা কমিটির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সালে দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন শুরুর পর থেকে দূর্নীতিবাজদের প্রার্থী করার প্রবণতা বেড়েছে, যা এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।