ঢাকা (রাত ৪:০৫) শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


প্রবাসে বড়লেখার আজিম আহমদের করোনা জয়

করোনা জয়ী বড়লেখার আজিম আহমদ
করোনা জয়ী বড়লেখার আজিম আহমদ

মেঘনা নিউজ ডেস্ক মেঘনা নিউজ ডেস্ক Clock রবিবার সন্ধ্যা ০৬:১১, ৩১ মে, ২০২০

মোঃ ইবাদুর রহমান জাকির, সিলেট প্রতিনিধিঃ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। তবে এই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে ফিরছেন অনেকেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উম্মুল-কোয়াইনে করোনা জয় করে সুস্থ হয়ে ফিরে আসা তেমনই একজন বড়লেখার আজিম আহমদ অফিস বাজার এলাকার।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৮ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে অবশেষে সুস্থ হয়ে আজ শনিবার (৩০ মে) বাসায় ফিরেছেন তিনি। গত ১৪ মে উম্মুল-কোয়াইন ফিল্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। করোনা পরীক্ষা নিরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়ার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তাকে ছাড়পত্র দেন চিকিৎসকরা ।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ৫নং দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের অফিসবাজার এলাকার সন্তান সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী আজিম আহমদ বর্তমানে করোনা মুক্ত হয়ে বাসায় অবস্থান করছেন।

প্রবাসী আজিম আহমদ করোনাক্রান্তকালীন দিনগুলির করুণ মূহুর্তগুলো বর্ণনা করেছেন মুটোফোনে প্রতিবেদকের কাছে। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন-‘প্রবাস জীবন হচ্ছে এমন একটি জীবন যে জীবনটি পাড়ি দিতে হয় পরিবারের কোন সদস্য ছাড়া সম্পূর্ণ একাকীভাবে। সে রকম একটি জীবনে সাধারণ জ্বরই হয়ে ওঠে অনেক বড় দুশ্চিন্তার কারণ। আর এরকম একটা প্রাণঘাতী অসুখ হলে তো কথাই নেই নিজের মনোবল ধরে রাখা কঠিন। তাই করোনা পজিটিভ রিপোর্ট জেনে আমি খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বার বার দেশে থাকা বন্ধু বান্ধব পরিবার এবং আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীর কথা মনে পড়ছিল। মনে মনে ভাবতাম মরে গেলে আমার লাশটাও দেশে পৌঁছাবে না। তবে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি আমি আমার ফেইসবুকে শেয়ার করি । আর এতে দেশে বিদেশে থাকা অসংখ্য মানুষ আমাকে ফোন করে মনে সাহস যোগান। সবার সাপোর্ট পেয়ে ও সাহসিকতায় আমার মনোবল বেড়ে যায়। সর্বোপরি এখানকার ডাক্তারদের আন্তরিক সেবা, সকলের দোয়া আর আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি সুস্থ হয়েছি। ’

আজিম আহমদ বলেন, ‘প্রথম দিকে সারা শরীরে ব্যথা এবং জ্বর অনুভূত হতে থাকে, একটানা বেশ কয়েক দিন এ উপসর্গ থাকার পর ধীরে ধীরে গলাব্যথা শুরু হয়। শুরুতে স্থানীয় হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কোভিড-১৯ এর টেস্ট করেন এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পজিটিভ ধরা পড়ে’।

তবে তার শরীরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ খুব একটা মারাত্মক পর্যায়ের না হলেও তার ডায়বেটিস থাকায় তাকে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয় বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, গত ১৪ মে আমাকে অমলকোয়াইন হসপিটালে ভর্তি করা হয়। ততদিনে আমার শরীরে অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড জ্বর আসত। খুব বেশী শ্বাস কষ্ট ছিল না তবে গলায় মনে হত ভারী কিছু আটকে আছে। কথা বলতে গেলে হাঁপিয়ে উঠতাম। হাটতে গেলে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মনে হত। এভাবে হাসপাতালে প্রথম ১ টা সপ্তাহ আমার কঠিন মুহূর্ত ছিল। তবে ডাক্তাররা অত্যন্ত যত্ন সহকারে সেবা দিয়েছেন। এক সপ্তাহ পর আমার খানিকটা উন্নতি হতে থাকে।

এসময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধের পাশাপাশি দিনে ৩-৪ বার চা এবং নিয়মিত গরম পানি খেয়েছি। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেইনি। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আমি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি বিভিন্নভাবে। তারপর আমি ধীরে ধীর সুস্থতা লাভ করি।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়ে করোনা জয়ী আজিম আহমদ বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য মানসিক দৃঢ়তার কোন বিকল্প নেই।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT