প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের
সরকারের ঘর ভেঙ্গে গেলে সরকার দেখবে : উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন কুন্ডুর
আসাদুজ্জামান খন্দকার, সাঘাটা, গাইবান্ধা সোমবার সকাল ১১:০৪, ৫ জুন, ২০২৩
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পূর্ব ছিলমানের পাড়া মৌজায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ঘরে ভুমিহীনদের থাকতে হয় আতঙ্কে। ঘর ঘেষেই গভীর খাল, যেকোনো মুহুর্তে ভাঙ্গনে ঘর গুলো খালে বিলীন হতে পারে স্বপ্নের ঘর। আবার নিজেদের সন্তানরা যে কোনো মুহুর্তে খালে পড়ে মৃত্যুর মুখে পড়তে পারে এই আতঙ্ক বিরাজ করছে ওই সব ঘরে বসবাসকারী লোকজনের মধ্যে।
জানা যায়, কয়েক মাস আগে উপজেলার পূব ছিলমানের পাড়া মৌজায় মরাবাঙ্গালী খালের তীরে নতুন করে তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৪৮টি ঘর নির্মাণ করে তা ভুমিহীন ও গৃহহীন ৩৫ পরিবারকে বসবাসের জন্য বন্দোবস্ত দেয়া হয়। প্রতিটি ঘরের জন্য ২ কোটি ৫৯ লাখ ৫০০ টাকা ব্যয় হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপহারেরর এসব ঘরের বন্দোবস্ত কমিটির সভাপতি উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাধারণ সম্পাদক সহকারী কমিশনার (ভুমি) ঘন-ঘন বদলীর কারণে ঘর গুলোর ভুমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন কুন্ডু।
ভুমিহীনরা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশি হয়ে বসবাস শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সেই স্বপ্নের ঘর গুলো মারাত্মক ভাবে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে। কারণ উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওই প্রকল্প ঘেষে জায়গা প্রায় ৪০ ফুট গভীর করে উত্তোলন করা মাটি দিয়ে ভিটা উচুঁ করে সেই ভিটায় এই ঘর গুলো নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ তারা প্রকল্পের পাশে থেকে মাটি উত্তোলনের সময় বাধা দিয়ে ছিলো। কিন্তু সরকারী লোকজন তখন বলেছেন, সরকারী কাজ ভেঙ্গে গেলে সরকারই দেখবে আপনাদের কি ? একারণে তার নিরব হয়ে যায় !
এদিকে ঘরে বসবাসকারী ভুমিহীন হামিদুল, শহিদুল,রেনুকা,ইছার উদ্দিন, দুদু মিয়া সহ অনেকেই বলেন, ঘর থেকে মাত্র ১০ থেকে ১৫ ফুট দুরেই গভীর খাল বর্ষা শুরু হলেই স্রোতে এবং প্রবল বর্ষণ শুরু হলেই খালের পাড় ভাঙ্গন শুরু হবে। তখন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই ঘর গুলো নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এছাড়া কয়েকটি শিশু সন্তানের মা বলেন, ঘরের পাশে গভীর খাল যেন মৃত্যুকূপ ! “কখন যে সন্তান খালে গিয়ে পড়ে”সারা দিন সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় !
ভুমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ কাজের সাথে সংল্লিষ্ট কামালেরপাড়া ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম সেলিমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিয়য়ে কিছুই বলতে চাননি। গভীর করে মাটি তুলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে প্রধামন্ত্রীর ঘর নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন কুন্ডুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারের ঘর ভেঙ্গে গেলে সরকার দেখবে। তবে এখানে কোনো প্রবাহমান নদী নয় যে ভেঙ্গে যাবে! তারপরও নিউজ করা প্রয়োজন মনে করলে করেন।