গরমে গৌরীপুরে বেড়েছে তাল শাঁসের কদর
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ মঙ্গলবার রাত ১০:৪৭, ১ জুন, ২০২১
চলছে মধুমাস, চারদিকে বাহারি ফলের সমাহার। আম, কাঁঠাল, লিচু, কলার ভিড়ের মধ্যেও তাল শাঁস অন্যতম জায়গা দখল করেছে। জৈষ্ঠ্যের খরতাপে দাবদাহ বেড়েই চলেছে। গরমের স্বস্থি হিসেবে তাল শাঁসের কদর বেড়েছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে।
পাকা তালের পূর্ববস্থাটির নামই তাল শাঁস। এটি এলাকাভিত্তিক তাল শাঁস, তালের আঁটি, কোথাও কোথাও কচি তাল নামেও পরিচিত। এটি নরম, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও প্রশান্তিদায়ক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গৌরীপুর পৌর শহরের মধ্যবাজার, হারুন পার্ক, উত্তর বাজার, দোতলা মসজিদের সামনে, ভালুকা মোড়ে বিক্রি হচ্ছে এ ফল। এছাড়াও উপজেলার শাহগঞ্জ বাজার, ভূটিয়ারকোণা বাজার, কলতাপাড়া বাজার, রামগোপালপুর বাজার, শ্যামগঞ্জ বাজারের পাকা রাস্তার ধারে, বিভিন্ন মোড়ে তাল শাঁস বিক্রি করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় ভ্যানে করে ভ্রাম্যমান তাল শাঁস বিক্রি করছেন অনেকে।
ইছুলিয়া গ্রাম থেকে তালের শাঁস ক্রয় করে নিয়ে আসা আঃ রহিম বলেন, গাছ চুক্তি কিনে আনতে হয়। প্রতিটি বড় গাছে ৩/৪ শ আর ছোট গাছে ২/৩ শ তাল শাঁস পাওয়া যায়। গাছ চুক্তি প্রতিটি তাল শাঁস পরিবহনসহ ৫-৬ টাকা খরচ পরে যায়। প্রতিটি তাল শাঁসে ২/৩টি আঁটি থাকে। প্রতিটি তালের আঁটি ৫ টাকা করে বিক্রি করে থাকি।
হারুন পার্কের তাল শাঁস বিক্রেতা আজিজুল হক বলেন, তিনি গাছ চুক্তি তাল শাঁস ক্রয় করে আনেন। প্রতিটি তাল গাছে প্রায় ৩/৪শ তাল শাঁস পাওয়া যায়। প্রতিটি তাল শাঁস যাতায়াতসহ গড়ে ৩-৫ টাকায় ক্রয় করেন। এক একটি তাল শাঁসে ৩টি আঁটি বা বিচি থাকে যা বিক্রয় হয় ৫টাকা করে, অর্থাৎ প্রতিটি শাঁস বিক্রয় হয় ১৫ টাকা। তিনি আরো বলেন, সারাদিনে ৩শ তাল শাঁস বিক্রয় করলে লাভ হয় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা।
আরেক ব্যবসায়ী আঃ ছালাম বলেন, গরমের জন্যে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়েছে। সারাদিনে তালের শাঁস বিক্রি করলে ৮/৯শ টাকা লাভ হয়।
পৌর শহরে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাল শাঁস ক্রয় করছেন। প্রতিটি দোকানে ভিড় লেগে আছে।
উত্তর বাজার এলাকায় তাল শাঁস ক্রয় করতে আসা রাকিব বলেন, প্রচন্ড রকম গরম। এই গরমে স্বস্থি পেতেই তিনি তাল শাঁস খাচ্ছেন। এতে করে পানি পিপাসা দূর হবে।
গৌরীপুর কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার বলেন, তাল শাঁস অনেক উপকারি একটি ফল। শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তিনি আরো বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম তাল শাঁসে ৮৭ দশমিক ৬ গ্রাম জলীয় অংশ, ৮৭কিলো ক্যালরী, ভিটামিন-সি ৫ মিলিগ্রাম, আমিষ শূন্য দশমিক ৮ গ্রাম, ফাইভার ১ গ্রাম, শর্করা ১০ দশমিক ৯ গ্রাম, লৌহ ১ মিলিগ্রাম, ফ্যাট শূন্য দশমিক ১ গ্রাম, নিয়াসিন শূন্য দশমিক ৩ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন শূন্য দশমিক শূন্য ২ মিলিগ্রাম, ক্যালশিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন থায়ামিন শূন্য দশমিক ৪ মিলিগ্রাম।